২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আহমেদ শাকিল-এর মরদেহ আজ বুধবার ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের টুমচর মসজিদের পারিবারিক কবরস্থান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করা হয়েছে।

সকাল ১১টায় আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মাহমুদ বুলবুল-এর নেতৃত্বে লাশ উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভোলা জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাঈমুল হাসনাত, মিরপুর থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. কবির, শহীদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বুলবুল বলেন,

“ঢাকার সিএমএম আদালতের নির্দেশে আমরা মরদেহ উত্তোলন করেছি। শাকিলের শরীর থেকে ৯৬টি খণ্ডিত হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পূর্বের স্থানে পুনরায় দাফন করা হবে।”

ঢাকা মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আল-আমীন রহমান বলেন,

“শাকিল ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সৈনিক। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের তিনি ছিলেন সাহসী কণ্ঠ। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, একটি মহল শহীদদের আত্মত্যাগকে রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করছে। এভাবে জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান যদি স্বার্থের খেলায় হারিয়ে যায়, তবে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না।”

শহীদ শাকিল: সংক্ষিপ্ত প্রেক্ষাপট

গত বছরের ৪ আগস্ট, জুলাই অভ্যুত্থানের শেষ ধাপে, রাজধানীর মিরপুরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শাকিল। পরবর্তীতে আঁগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হলে ৭ আগস্ট তার মৃত্যু হয়।

এই হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে। এখনও এ ঘটনার বিচার কার্যকর হয়নি। এক বছর পেরিয়ে গেলেও নিহত শহীদদের বিচার কিংবা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বাস্তবায়িত হয়নি বলেই অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

শহীদ শাকিলের লাশ উত্তোলন নতুন করে বিচারের দাবিকে তীব্র করেছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবি— সব শহীদের মর্যাদা নিশ্চিত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানই হবে দেশের গণতান্ত্রিক চেতনার প্রকৃত প্রতিফলন।