বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, গত ১৬ বছর জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপরে নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানো হয়েছে। কিন্তু আমরা কেউ ঘাবড়ে যাইনি। জামায়াতে ইসলামী কারো চোখ রাঙানির পরোয়া করে না। জামায়াতে ইসলামী সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে এক দুর্জয় কাফেলার নাম; তাই সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন, দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য দায়িত্বশীলদের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে আপোসহীন ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, জামায়াত জনগণের মুক্তি ও কল্যাণে কাজ করাকেই নিজেদের ধ্যান-জ্ঞান মনে করে। তাই জামায়াতের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদেরকে জনগণের সাথে সদাচরণ ও তাদের কল্যাণে কাজ করতে হবে। গণমানুষের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেসব সমাধানের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, কন্যা দায়গ্রস্ত পিতার দায়মুক্তির জন্য সকল পর্যায়ে জনশক্তিকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ যেকোন সমস্যা সমাধানে আমাদেরকে ময়দানে অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ, ইসলামই পারে মানুষের সকল সমস্যার সমাধান দিতে। আমাদেরকে বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুলতে হবে ‘সব সমস্যার সমাধান; দিতে পারে ইসলাম’। তিনি আর্ত-মানবতার মুক্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে সেই স্বপ্নের ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। গত শনিবার রাতে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে ওয়ার্ড আমীর/সভাপতি সেক্রেটারি সম্মেলন-২০২৫ এ সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা ওলিউল্লাহ, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, আ স ম মামুন শাহীন, ইঞ্জিনিয়ার মোল্লা আলমগীর, মীম মিরাজ হোসাইন, খুলনা সদর থানা আমীর এস এম হাফিজুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আমীর জি এম শহিদুল ইসলাম, খালিশপুর থানা আমীর আব্দুল্লাহ আল মামুন, দৌলতপুর থানা আমীর মাওলানা মোশাররফ আনসারী, আড়ংঘাটা থানা আমীর নিয়াজ আনসারী, হরিণটানা থানা আমীর আব্দুর গফুর, লবণচরা থানা আমীর মোজাফফর হোসেন, মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি এস এম মাহফুজুর রহমান, কাজী মাহফুজুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন, আল হাফিজ সোহাগ, খান আব্দুল ওয়াহেদ প্রমুখ।
অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে নিজেদের জীবন ও চরিত্রকে আলোকিত করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। তাই জামায়াত ব্যক্তির জ্ঞান চর্চাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছে। আমরা জ্ঞানের আলোয় আলোকিত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আপোসহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অন্য দলে তা করা হয় না। তাদের কর্মসূচিই হচ্ছে পেশিশক্তি নির্ভর। মূলত, জামায়াতে ইসলামী অহীর জ্ঞানের ভিত্তিতে চরিত্র গঠনের এক অদ্বিতীয় মাধ্যম। আমাদের কোন জনশক্তিই অপরাধের সাথে জড়িত নন। কোন দুঃশ্চরিত্র, বদমেজাজী, অহংকারী, সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজদের জামায়াতে কোন স্থান নেই। তিনি জ্ঞানভিত্তিক ও ইনসাফপূর্ণ নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকলকে আত্মগঠন ও পরিবার গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এদেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশ পেয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে একটি সুখি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে চায়। একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায়, যাতে ১৮ কোটি মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। যেখানে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশের জনগণের প্রয়োজনে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে খুলনা মহানগরী জামায়াত অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মহানগরীর ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে ও মহান রবের দরবারে শুকরিয়া জানিয়ে আগামী দিনেও জাতির প্রয়োজনে মহানগরী জামায়াত তার সামর্থ্যের আলোকে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।