ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে বাজেটে বিশেষ গুরুত্বারোপ করবে। তিনি বলেন, জনগণের করের টাকায় এমপি-মন্ত্রী আর আমলাদের বিলাসী জীবনযাপনের কারণেই জনগণ রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে প্রথম কাজ হবে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে যা যা করার তার সবটাই করা হবে। ‘‘সবার আগে দেশ; সবার ঊর্ধ্বে জনগণ’’-এই নীতিতেই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সূত্রাপুর থানার উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বাজেটের প্রতি ১০০ টাকায় স্বাস্থ্যখাতের জন্য বরাদ্দ ৩ টাকা ৩২ পয়সা! যেটি বিশ্বের ৫১টি নি¤œমধ্যম আয়ের দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৮ তম। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বিবেচনায় কমপক্ষে স্বাস্থ্যখাতের বাজেটের ১০ শতাংশ বরাদ্দ করা জরুরি। তাহলে প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। কিন্তু অতীতের কোনো সরকারই জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেনি। তারা দুর্নীতি আর লুটপাটে ব্যস্ত ছিল। যার কারণে কেউ কেউ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও এখনো দেশে-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুজাহিদ দুজনে তিনটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের পরিবার এখনো সাধারণ জীবনযাপন করছেন। কারণ তারা দুর্নীতি মাধ্যমে দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেননি। তারা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন, কেউ যদি আমাদের বিরুদ্ধে দুই পয়সার দুর্নীতির প্রমাণ করতে পারে তবে শুধু মন্ত্রীত্ব নয় জামায়াতে ইসলামীর কর্মীর পদ থেকেও পদত্যাগ করবো। তাদের সেই চ্যালেঞ্জ আজ পর্যন্ত কেউ গ্রহণ করতে পারেনি। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় বিচারিক হত্যা করলেও দুর্নীতি-অনিয়মের কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি। কারণ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দুর্নীতি নাই, সন্ত্রাস নাই, চাঁদাবাজ নাই। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। তাই তিনি উপস্থিত স্থানীয়দের আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সূত্রাপুর উত্তর থানা আমীর রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং থানা বাইতুলমাল সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুছ মিয়ার পরিচালনায় উদ্বোধনী সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সূত্রাপুর পূর্ব থানা আমীর নোমান শিকদার, সূত্রাপুর উত্তর থানা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুর রহমান, নুর হোসেন রবিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনে ইসলামী কোনাপাড়া থানার উদ্যোগে সোমবার রাতে এক নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন। মহানগরীর মজলিসে শূরা সদস্য ও কোনাপাড়া থানা আমীর আকতারুজজামান চয়নের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা শরীফুল ইসলাম, হারুন রশিদ, মাওলানা মীর আল আমিন, ওয়ার্ড সভাপতি মনজিল মাহমুদ, ওয়ার্ড সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি (ঢাকা-৫ আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী) মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, “ঘরে ঘরে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দিতে হবে। দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জামায়াতের বিকল্প জামায়াত।” কারণ বিগত ৫৪ বছরে জনগণ সব দলকেই দেখেছে। তারা জাতিকে কিছুই দিতে পারেনি। তারা কেবল নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিল। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে, ইনশাআল্লাহ। ঢাকা-৫ সংসদীয় এলাকাকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদকমুক্ত নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি স্থানীয়দের কাছে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সমর্থন কামনা করেন।

অপরদিকে ঢাকা-৯ সংসদীয় আসনে জামায়াতে ইসলামী খিলগাঁও উত্তর থানার (৩ নং ওয়ার্ডের) উদ্যোগে সোমবার রাতে এক নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী কবির আহমদ। খিলগাঁও উত্তর থানা আমীর নাসির উদ্দিনের পৃষ্ঠপোষকতায় ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যাক্তি গাজী নাজির আহমদের সভাপতিত্বে উঠান বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য ও খিলগাঁও পশ্চিম থানা আমীর এস. এম. মাহমুদ হাসান, ঢাকা-৯ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী মিডিয়া সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। থানা সেক্রেটারি মো. আলমগীর হোসাইনের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর জুলফিকার আলী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খিলগাঁও জোনের পরিচালক মো. ইউসুফ,৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী শহীদুল ইসলাম, থানা কর্মপরিষদ সদস্য সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী। ঢাকা-৯ সংসদীয় এলাকাকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদকমুক্ত নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান অতিথি কবির আহমেদ স্থানীয়দের কাছে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সমর্থন কামনা করেন।

এছাড়াও জামায়াতে ইসলামী মনোনীত ঢাকা-৭ আসনের এমপি পদপ্রার্থী হাফেজ হাজী এনায়েতুল্লাহ সোমবার দিনব্যাপী ব্যাপক গণসংযোগ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তিনি বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, মাঠে-ঘাটে জনসাধারণের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে স্থানীদের কাছে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে সমর্থন কামনা করেন। পাশাপাশি এলকার জনসাধারণের সমস্যা শুনে তিনি সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন। এসময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৭ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালক ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য আব্দুর রহমান, চকবাজার উত্তর থানা আমির মাওলানা মাহফুজুর রহমান, চকবাজার পশ্চিম থানা আমির আবুল হোসেন রাজন, থানা শূরা ও কর্মপরিষদের সদস্য এবং উলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা এবিএম সিদ্দিকী ইব্রাহীম, থানা শূরা কর্মপরিষদের সদস্য মনির হোসেন, আবু হানিফ, দেলোয়ার হোসেন, মাওলানা ইমাম হোসেন এবং ২৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও ওয়ার্ড সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন জসিম।