রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সু-সংবাদ নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে পবিত্র মাহে রমাদান। মহিমান্বিত এই মাস মুসলমানের জন্য নৈতিক প্রশিক্ষণ ও আত্মশুদ্ধির। রোববার (২ মার্চ) শুরু হয়েছে রমযানের প্রথম দশক রহমতের তৃতীয় দিন। রোজাকে ঘিরে খুলনার মোড়ে মোড়ে বাহারি ইফতারের পশরা সাজিয়ে বসেছে মওসুমি ইফতার বিক্রেতারা, পাশাপাশি আয়োজনের কমতি নেই খুলনার প্রসিদ্ধ হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ডাকবাংলো, শিববাড়ী, ফেরিঘাট, নিউমার্কেট, ময়লাপোতা, সাতরাস্তার মোড়, গল্লামারী, নিরালা, জিরোপয়েন্ট, রূপসা, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর দৌলতপুর, রেলিগেট, মানিকতলা, ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি এলাকাসহ স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরা ও মওসুমী ইফতারের দোকানে বিক্রি হচ্ছে বাহারি ইফতারি। এসব ইফতারের মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে ছোলা, পিয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, ডিমের চপ, চিকেন চপ, শাহী জিলাপী, রেশমী জিলাপী, শাহী হালিম, ফ্রটুস্ জুট, ফিরনি, লাচ্ছি, ফালুদাসহ হরেক স্বাদের ইফতারী বিক্রি করছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ছোলা প্রতিকেজি ১৪০-১৫০ টাকা, পিয়াজু প্রতি পিস ৫-৮ টাকা, বেগুনি ৫-৮ টাকা প্রতি পিস, আলুর চপ ৫-৮ টাকা, ডিমের চপ বড় প্রতি পিস ১৫-২০ টাকা, মাঝারী প্রতি পিস ১০টাকা, চিকেন চপ প্রতি পিস,২০-৩০ টাকা, চিংড়ি চপ প্রতি পিস ২০-৩০ টাকা, বুন্দিয়া প্রতিকেজি ১৮০-২০০ টাকা শাহী জিলাপী প্রতিকেজি ২০০-২২০ টাকা, রেশমী জিলাপী প্রতি কেজি ৩২০-৩৫০ টাকা, শাহী হালিম প্রতি কেজি ৩০০-৪০০ টাকা, হাফ কেজি ১৫০-২০০ টাকা, ফিরনি প্রতি বাটি ৫০ টাকা, লাচ্ছি প্রতি গ্লাস ৮০টাকা, ফালুদা প্রতি গ্লাস দরে ১০০/১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন অভিজাত হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে দামের কিছু তারতম্য দেখা গেছে।
পথচারী শওকত জানান, শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাহে রমযান উপলক্ষে বাহারি ইফতার বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম একটু বেশি। প্রতিদিন বাড়ীতে ইফতার তৈরী করা না । তাই ইফতারির আগে বাইরে থেকে ইফতার কিনে নিয়ে যায়। বাড়ীতে স্ত্রী, ছেয়ে মেয়ে রোযা রাখে। চাকরিজীবী মইনুল ইসলাম জানান, স্ত্রী বাড়ীতে কিছু ইফতারি তৈরী করে। আমি অফিস হতে ফেরার পথে হালিম, লাচ্ছি, ফলফলাদি কিনে নিয়ে আসি। রোযার মাস খুব ভালো লাগে, বিশেষ করে ইফতার পূর্ব মুর্হুতে। রাকিব নামের রোযাদার জানান, বাড়িতে আমার স্ত্রী, বাবা-মা, ভাই-বোন এবং আমি রোযা রাখি। রোযার মাসে সবাই সবার জায়াগা হতে ইবাদত বন্দেগী করুক, এটা আমি চাই। তাই পরিবারে ইফতারির বাড়তি কষ্ট হোক চাই না , বিধায় অফিস হতে ফেরার পথে হোটেল হতে প্রয়োজন অনুসারে পরিবারের জন্য ইফতার কিনি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ইফতারী দাম বেশি মনে হচ্ছে।
ফল বিক্রেতা এনামুল জানান, খেজুর দিয়ে ইফতারী করা সুন্নাত। তাই খেজুর যেন সবাই বাধ্যতামূলক কিনছে। খেজুরের পাশাপাশি অনেকেই দেশি-বিদেশী ফল ও কিনছে। ক্রেতা সাড়া ভালো। ফলের পাশাপাশি মিষ্টান্ন দোকানগুলোতে ভালো বেচাকেনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা। মুসলিম উম্মেহার আত্মশুদ্ধির মাস মাহে রমাদান, যা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মুসলিমের উপর রহমতের মাস। তিন দশক নিয়ে রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের প্রাপ্তির মাস রমাদান। নগরবাসী প্রাপ্তি যেন আল্লাহপাক সুস্থভাবে সকলকে রোযা রাখার তৌফিকদান করেন, সেই সাথে সঠিক ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে নেন। আর মার্জনা করেন সকল গুনাহ।