DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

গ্রাম-গঞ্জ-শহর

জেলা পর্যায়ে শ্রম আদালত সম্প্রসারিত না হওয়ায় শ্রমিকরা আইনি সুবিধা থেকে বঞ্চিত

জেলায় জেলা জজ আদালত ও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ধাপে ধাপে অনেক বিচারক রাখা হলেও জেলা পর্যায়ে শ্রম আদালত সংযুক্ত করা হয়নি। ঢাকা ছাড়া অন্যত্র অঞ্চলগুলোর শুধুমাত্র বিভাগীয়

Printed Edition
DailySangram-Logo

মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, বগুড়া অফিস : জেলায় জেলা জজ আদালত ও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ধাপে ধাপে অনেক বিচারক রাখা হলেও জেলা পর্যায়ে শ্রম আদালত সংযুক্ত করা হয়নি। ঢাকা ছাড়া অন্যত্র অঞ্চলগুলোর শুধুমাত্র বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রম আদালত রয়েছে। এগুলোতে মাত্র একজন চেয়ারম্যান অর্থাৎ বিচারক রেখে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এতে করে দিন দিন মামলার জট বেড়েই চলছে। উত্তরাঞ্চলের প্রায় ১ কোটি শ্রমিকের জন্য রাজশাহী ও রংপুরে মাত্র দুটি আদলাত রয়েছে। চেয়ারম্যানও রয়েছে মাত্র দুজন। তবে করোনার আগে পর্যন্ত বগুড়ায় শ্রম আদালতের কার্যক্রম চলমান ছিল।

শহরের অদূরে ঠেঙ্গামারা এলাকার টিএমএসএস এর একটি ভবনে এই আদলতের অস্থায়ী কার্যক্রম চলমান ছিল। সিডিউল অনুযায়ী এখানেও চেয়ারম্যান বসতেন। কিন্তু করোনার সময় একদিকে ভয়াবহ পরিস্থিতি, অন্যদিকে ৬ লেনের মহাসড়কের কাজ শুরু হওয়ায় সরকারি কাজের জন্য এই ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। তখন আদালতের কার্যক্রম গুটিয়ে পুনরায় রাজশাহীতে সংযুক্ত করা হয়। তার পর আর ফিরে আসেনি। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে কয়েকটি জেলার শ্রমিকরা। বিশেষ করে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা। কারণ এই চার জেলা নিয়ে বগুড়া শ্রম অঞ্চল গঠিত।

বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর অধীনে যত অপরাধ রয়েছে, তার প্রতিটি অপরাধের বিচারের জন্য শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করার বিধান রয়েছে। শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, শিল্পবিরোধ উত্থাপন ও নিষ্পত্তি, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, কল্যাণ ও চাকরির অবস্থা ও পরিবেশ এবং শিক্ষাধীনতা ও সংশি¬ষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে এই আইনে বর্ণিত রয়েছে। শ্রম আদালতের দেওয়ানী এবং ফৌজদারি উভয় ধরনের এখতিয়ার রয়েছে, সেহেতু এখন ভিকটিম যেভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হোক না কেন, ন্যায় বিচারের জন্য অবশ্যই শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবেন। কিন্তু একদিকে এসব নানা সুবিধার কথা না জানা অন্যদিকে শতাধিক কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে শ্রম আদালতে পৌঁছে সুবিধা নেয়ার মতো অবস্থায় নেই শ্রমিকরা। একারণে শ্রম আদালতের নানা সুযোগ সুবিধার চিন্তা বাদ দিয়ে নানা অভিযোগ, অনুযোগ, নিরাপত্তা ও সহায়তার কথা ভুলে গিয়ে। দিন আনি দিন খাই চিন্তা মাথায় নিয়ে ধীরে ধীরেই এগিয়ে চলছে শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে বগুড়া বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল বারি এরশাদ বলেন। বগুড়ায় শ্রম আদালত ছিল কিন্তু নানা কারণে আদালতের কার্যক্রম রাজশাহীতে নেওয়া হয়েছে। বগুড়ায় একটি শ্রম আদালত এতোটাই জরুরী যে তা বুঝানো কঠিন। কারন ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাজশাহীতে গিয়ে এই সেবা নেয়া সাধারণ শ্রমিকদের পক্ষে অসাধ্য। তিনি দ্রুত সময়ে শ্রম আদালত বগুড়ায় স্থানান্তর করার দাবি জানায়।

বগুড়া আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন্স মোহাম্মদ শহিদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বগুড়ায় শ্রম আদালতের কার্যক্রম ছিল কিন্তু করোনা ও সিক্সলেন রাস্তা তৈরির সময় আদালতের কার্যক্রম রাজশাহীতে নেয়া হয়েছে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, আদালতের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা যাবে কিনা আমরা এটির পক্ষেই বলেছি। এই কর্মকর্তা আরোও বলেন, বগুড়ায় আদালতের কার্যক্রম শুরু করা হলে শ্রমিকরা অনেক সুবিধা পাবে।