বাজারে সিন্ডিকেট ও কারসাজি রোধ করে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত এবং ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষায় প্রতিযোগিতা কমিশন কার্যকর ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য ড. আফরোজা বিলকিস। গত রোববার চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে “প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যাবলী” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। এতে সভাপতিত্ব করেন চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আফরোজা বিলকিস বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা গড়ে তুলতে ২০১২ সালে সরকার প্রতিযোগিতা আইন প্রণয়ন করে এবং ২০১৬ সালে প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করে। এ আইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি রোধ করা এবং কারসাজির মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানো। তিনি আরও বলেন, কমিশন শুধু অনিয়ম দমন নয়, আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে মতবিনিময় করছে এবং গবেষণার মাধ্যমে আইনকে আরও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিচ্ছে।

চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির টালমাটালের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। তবে সিন্ডিকেট, একচেটিয়া ব্যবসা ও কারসাজি বাজারের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে। এই জায়গাতেই প্রতিযোগিতা কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা আইন দেশের শিল্প-বাণিজ্যে নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে। তবে এর পূর্ণ সুফল পেতে হলে নিয়মিত পর্যালোচনা, বাস্তবায়ন কৌশল উন্নয়ন এবং সব অংশীজনের মধ্যে সমন্বয় অপরিহার্য। একই সঙ্গে তিনি আইনটি যাতে অন্যান্য আইন, বিশেষত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের পরিচালক বিমলেন্দু ভৌমিক, চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক মো. সোলায়মান, উইম্যান চেম্বারের পরিচালক আমিনা শাহিন, কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মিজানুর রহমান মিজান, বিএসআরএম’র প্রতিনিধি সঞ্জয় কুমার ঘোষ ও মো. ইসমাইলসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতা বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, সরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতা আইনের আওতার বাইরে থাকায় নিয়ম ভঙ্গ করেও দায়মুক্ত থাকে। তাই এই আইনকে সার্বজনীন করতে হবে এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করা জরুরি। তারা আরও বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনকে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে ভোক্তা কিংবা ব্যবসায়ী-কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।