হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার গুমানমর্দন ও মির্জাপুর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী কুমারী খাল অবশেষে সরকারি উদ্যোগে পুনঃখনন ও সংস্কার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পলিতে ভরাট হয়ে কার্যকারিতা হারানো খালটিকে আবারও প্রাণবন্ত করে তোলার এ উদ্যোগে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দারা।
এই খাল যুগ যুগ ধরে স্থানীয় কৃষকদের কৃষিকাজে পানি সরবরাহ ও নিকাশ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিল। তবে দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় খালটির পানি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে বর্ষাকালে পানিবদ্ধতা আর শুষ্ক মৌসুমে সেচসংকটে পড়তেন কৃষকরা। সেই খালেই এখন চলছে খননযজ্ঞ, আর খালের দু’পাশ ঘেঁষে তৈরি হচ্ছে সরু সড়ক যা ভবিষ্যতে কৃষি উৎপাদন পরিবহনে সহায়ক হবে বলে আশা করছেন সবাই।
স্থানীয় কৃষক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “আমাদের ফসলি জমি এই খালের পানির ওপর নির্ভরশীল। আগে যখন খাল দিয়ে পানি আসতো, তখন ফলন ভালো হতো। এখন আবার খাল খনন হচ্ছে। এই উদ্যোগ আমাদের কৃষির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।”
অন্য এক কৃষক আবদুল মালেক জানান, “এই খালের পাড় দিয়ে রাস্তা হলে আমরা সহজেই ট্রলি বা ভ্যান নিয়ে ধান-সবজি সরকারহাট বাজারে নিতে পারবো। আগে এসব পণ্য ঘাড়ে বা মাথায় বয়ে আনতে হতো।”
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)-এর অর্থায়নে এই খনন ও সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, খাল খননের পাশাপাশি এ সড়কটি নির্মিত হলে এলাকার কৃষিকাজে গতি আসবে, পরিবহন সহজ হবে এবং জনসাধারণের দৈনন্দিন যাতায়াতে নতুন সুবিধা সৃষ্টি হবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল জানান, এটি একটি সময়োপযোগী ও জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। তবে তাঁরা এও চান, যেন খনন ও নির্মাণ কাজটি পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং কাজ শেষে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়।
গুমানমর্দন ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে বর্তমান মেম্বার মো.আলমগীর বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই খাল সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। অবশেষে কাজ প্রায় শেষ হয়েছে, এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।”
এ প্রকল্পের ফলে হাটহাজারীর উত্তরাঞ্চলের কৃষি উৎপাদন ও পরিবহন ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।