বরেন্দ্র অঞ্চলের নদ-নদী, খাল-খাড়ি ও বিল ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এবং দেশীয় মাছের প্রজনন ও জেলে সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকা টিকিয়ে রাখতে চায়না দুয়ারি জালসহ মাছ ধরার ক্ষতিকর বিদেশী সরঞ্জাম নিষিদ্ধ করার দাবিতে বরেন্দ্র অঞ্চল তথা রাজশাহীর স্থানীয় জেলেরা মানববন্ধন ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

গতকাল রোববার সকালে রাজশাহীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে গ্রীন কোয়ালিশন (সবুজ সংহতি) ও উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জেলেরা ঐতিহ্যবাহী মাছ শিকার করার উপকরণ খোরা জাল, বিত্তি, পলো, ডুবি, ধুন্দি, কুড়ি জাল, বালচা জাল, ফাঁদ জাল, চাঁই, ছই, ডুবচাঁই, পলোসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে এই কর্মসূচিতে যোগদান করেন। তারা চায়না জাল বন্ধের দাবি করেন।

মানববন্ধনে মাঠ পর্যায়ে বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলেদের অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণভিত্তিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বারসিক’র গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চল তথা রাজশাহী প্রায় সকল নদ-নদী, খাল বিলে চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়। একইসাথে নদীতে মাছ ধরতে রাসায়নিক হানিটোপ ব্যবহার করা হয়। যার বেশিরভাগ আমদানি করে চায়না থেকে।

চায়না দুয়ারি জাল অত্যন্ত চিকন ফাঁস এবং সকল ধরনের মাছের পোনা পর্যন্ত আটকে মরে যায়। এর ফলে মাছসহ জলজপ্রাণবৈচিত্র্য দিনে দিনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মৎস সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ৪.৫ সেন্টিমিটার বা তদপেক্ষা কম ব্যাস বা দৈর্ঘ্যের ফাঁস বিশিষ্ট জাল ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও রাজশাহীর নদ-নদী, খাল এবং জলাভূমিতে প্রকাশ্যে চায়না দুয়ারি বা চিকন নেট বা কারেন্ট জাল ব্যবহার করছে।

এর ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলের জলজ প্রতিবেশে দেশি মাছের প্রজাতির পাশাপাশি অগণিত জলজ উদ্ভিদ, পাখি, ব্যাঙ ও কচ্ছপ, জলজ উদ্ভিদবৈচিত্র্য কমে যাচ্ছে এবং জলজ বাস্তুসংস্থান ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তারা জানান, বিলকুমারিতে আগে অনেক জাতের মাছ ছিল, এখন আর নেই, মৌসুমে মাছ পাওয়া যায় না। মানববন্ধন শেষে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের ম্যাধমে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঁচ দফা দাবি সম্মিলত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।