নান্দাইল (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সাবেক ইউএনও অরুণ কৃষ্ণ পালকে অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে অভিযোগ তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসন তলব করেছে। গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) স্থানীয় সরকার লুৎফুন নাহার এর কার্যালয়ে এ শোনানী অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত শোনানীতে অভিযুক্ত নির্বাহী কর্মকর্তা অরুন কৃষ্ণ পালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগকারী নান্দাইলের নাগরিক মো: আহসান কাদের ও রফিকুল ইসলামেরও জবানবন্দী গ্রহন করা হয়েছে।
এ সময় অভিযুক্ত নির্বাহী কর্মকর্তা অরুন কৃষ্ণ পাল ও অভিযোগকারী মো: আহসান কাদের উপস্থিত হয়ে নিজ নিজ বক্তব্য পেশ করেন। তবে আর এক অভিযোগকারী রফিকুল ইসলাম অসুস্থ থাকায় তিনি তার বক্তব্য লিখিত আকারে প্রেরণ করেছেন। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) লুৎফুন নাহার জানান, সংস্থাপন শাখার নির্দেশনা অনুযায়ী নান্দাইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা অরুন কৃষ্ণ পালের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের শোনানী হয়েছে। অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীর এক জন উপস্থিত হয়ে এ শোনানীতে বক্তব্য প্রদান করেছেন।
অন্য আর এক অভিযোগকারী অসুস্থত থাকায় লিখিত বক্তব্য পাঠিয়েছেন। আমি তাদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেছি। খুব শীঘ্রই নান্দাইল উপজেলায় সরেজমিনে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পেশ করা হবে। তদন্তাধীন বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছ’ বলা যাচ্ছে না।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুণ কৃষ্ণ পাল ২০২৩ সালের ৩১শে আগস্ট যোগদানের পর থেকে আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য অসিম কুমার অখিল ও সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী মেজর জেনা: আব্দুস সালামের নাম ভাঙ্গিয়ে ও বিভিন্ন ধরনের প্রভাব কাটিয়ে দাপটের সহিত স্বৈরচারী, অনিয়ম ও দূর্নীতি করে গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নান্দাইলের আশ্রয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, সরকারী বাসায় থেকে বেতন থেকে বাসা ভাড়ার টাকা কর্তন না করা, বাসার বিদ্যুৎ বিল উপজেলা পরিষদ কর্তৃক প্রদান করানো, ২৬শে মার্চ ও ১৬ই ডিসেম্বর উপলেক্ষ বিভিন্ন খাত ও ব্যাক্তির নিকট হতে চাঁদাবাজী করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, হাট বাজার ইজরা ডাকে চরম অনিয়ম সহ বিভিন্ন দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নিয়ে টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও হতদরিদ্রের জন্য ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করে প্রকল্পের সাড়ে ৬ কোটি টাকার ৪০% অফিস খরচ দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ, সড়ক ও জনপদের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নামে মোটা অঙ্কের বাণিজ্য, বিভিন্ন হাট-বাজারের ইজারা নিয়ে অনিয়ম এবং খাস কালেকশন করে পুরো টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে রাজস্বখাতের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের ব্যাপক অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে সাবেক ইউএনও অরুণ কৃষ্ণ পালের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।