চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বাজেট ঘোষণা করেছেন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
সোমবার দুপুরে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১ হাজার ২২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেটও উপস্থাপন করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তৎকালীন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী পালিয়ে যান। পরে আদালতের নির্দেশে বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
প্রথম বাজেটে মেয়র শাহাদাত চারটি পরিকল্পনাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছেন — নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ, জনবল কাঠামো নতুনভাবে প্রণয়ন এবং সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন।
বাজেটে ১ হাজার ৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা নিজস্ব উৎস থেকে আয় এবং ১ হাজার ৯২ কোটি ৫ লাখ টাকা সরকারি অনুদান হিসেবে প্রত্যাশা করা হয়েছে। ব্যয়ের মধ্যে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৬৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
দেনা পরিশোধে বরাদ্দ রয়েছে ১৪৯ কোটি টাকা। মেয়র জানান, দায়িত্ব গ্রহণের সময় করপোরেশনে মোট দেনা ছিল ৫৯৬ কোটি টাকা, যা আট মাসে কমে ৪০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এবারের বাজেটে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও মশকনিধনে মাত্র ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা অনেকটাই অপ্রতুল। তবে মেয়র জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯টি খাল থেকে ৪১ লাখ ঘনফুট মাটি অপসারণ এবং ১৪৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
অন্যদিকে, মশকনিধনে আধুনিক পদ্ধতি ও মার্কিন প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ৬১.৬৬ শতাংশ, অর্থাৎ ১ হাজার ২২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, “২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অবৈধ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আদালতের সুবিচারে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আশা করি নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে এবং চট্টগ্রামকে একটি ক্লিন-গ্রিন, স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ, প্রযুক্তিসম্পন্ন ও বাসযোগ্য অর্থনৈতিক এবং নান্দনিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।”