ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা, তাদের নিবন্ধনের জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উন্মুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন-ইসি।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন অ্যাপটি উদ্বোধন করার পর নিবন্ধনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। নমুনা হিসেবে মিশর, জাপান, আরব আমিরাত, কেনিয়া ও নেদারল্যান্ডস থেকে একজন করে প্রবাসীকে নিবন্ধ করতে দেখা যায়। পোস্টাল ভোটিং-এর মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে ‘এক অনন্য সংযোজন’ বলে মন্তব্য করেছেন সিইসি। তিনি বলেন, “আজকের অনুষ্ঠান (পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠান) গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন।”

এ সময় যারা সেখানে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা ইতিহাসের সাক্ষী হলেন। বাংলাদেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটা ইতিহাস সৃষ্টি করল। সেই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলেন আপনারা। বর্তমানে প্রায় এক কোটি ৩০ লক্ষাধিক মানুষ বিদেশে বসবাস করছে এবং বিভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছে। এতদিন এই বিদেশে থাকা নাগরিকরা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আজকের এই উদ্যোগ সেই বঞ্চনার অবসান ঘটাচ্ছে।

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঁচ দিন করে নিবন্ধনের সময় বেঁধে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আজ বুধবার থেকে নিবন্ধন শুরু হবে। ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন অঞ্চলের দেশগুলোর প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া দেশের ভেতর তিন ধরনের ব্যক্তিদের নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়েছে ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে। এ সময় বাদ পড়া প্রবাসীরাও নিবন্ধন করতে পারবেন। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। একই দিনে একসঙ্গে গণভোটের সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ নিয়ে সিইসি বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭.১ ঘোষণা করে গণতন্ত্রের মালিক জনগণ। এই মালিকানার কোন ভৌগোলিক সীমানায় বাধা নয়। প্রবাসী নাগরিকরা যেমন অর্থনৈতিক নাগরিক হিসেবে ভূমিকা রাখছে, এমনভাবে গণতান্ত্রিক নাগরিক হিসেবে ভূমিকা রাখাও কর্তব্য। তাদের ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তি হবে আরও বিস্তৃত, প্রতিনিধিত্বশীল এবং আরও শক্তিশালী। তিন মাসের কিছুটা বেশি সময়ে মোবাইল অ্যাপ বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছে তুলে ধরে তিনি ‘এটাকে দুঃসাহসী’ বলে দাবি করেন।

বিদেশী অনেক বিশেষজ্ঞ সায় না দিলেও কমিশন সাহস নিয়ে এগিয়ে যায় দাবি করে সিইসি বলেন, আমি এটাকে দুঃসাহসী বলে অভিহিত করতে চাই। এটা দুঃসাধ্যের মত বিষয় ছিল। অ্যাপটির মাধ্যমে অনলাইনে নিবন্ধন করা যাবে এবং ভোটের বিষয়টি হবে ডাকযোগের মাধ্যমে। তবে অ্যাপটি বাস্তবায়নে ‘অনেক চ্যালেঞ্জ’ থাকার কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই তারা ধীরে ও ধারাবাহিতা রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন।