গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, হামলার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল ছিল, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের লালখান বাজারে জামেয়াতুল উলুম আল-ইসলামিয়া মাদরাসায় হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর ও ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।চরমোনাই পীর বলেন, “গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাদের ওপর যে অনাকাক্সিক্ষত, মর্মান্তিক হামলা হয়েছে— আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ ঘটনা আমাদের কল্পনারও বাইরে ছিল। আমরা ভেবেছিলাম স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করবে, কিন্তু সেখানে মারাত্মক দুর্বলতা দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলব, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখুন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রশাসন ও অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাই— যারা দেশবিরোধী, খুন-গুম-লুটপাট ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তারা যেন এ দেশের মাটিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।” চরমোনাই পীর জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমরা যারা ঐ সময়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করেছি, তাদের ঐক্য যেন দেশের স্বার্থে টিকে থাকে— সে বিষয়ে সবার আন্তরিক মনোভাব থাকতে হবে।”বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “পাঁচ আগস্টের পর কিছু মহল দেশে চাঁদাবাজি, স্টেশন দখল, মামলা বাণিজ্যসহ নানা রকম নৈরাজ্যে জড়িয়েছে। এসব নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা-সমালোচনা হওয়া দরকার। এতে যদি কারও গায়ে লাগে, তবু দেশের স্বার্থে এসব রোধে সবাইকে মনোযোগী হতে হবে।”ঐক্যমত্য ও নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য : ঐক্যমত্য কমিশনের অগ্রগতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে চরমোনাই পীর বলেন, “কমিশনের আলোচনা চললেও এখনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। আমাদের আন্তরিকতা আরও বাড়াতে হবে।”তিনি বলেন, “আমরা সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। এটা হলে প্রতিটি ভোটের গুরুত্ব থাকবে, এককভাবে কেউ ক্ষমতা দখল করতে পারবে না। আগের পদ্ধতিতে তো দিনের ভোট রাতে হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ফ্যাসিস্ট সরকার কায়েম হয়েছে।”ইসলামী ঐক্য ও সম্ভাব্য সমঝোতা : মুফতি ইজাহারুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে চরমোনাই পীর বলেন, “দেশ গঠনে ইসলামপন্থিদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। আমরা একমত হয়েছি যে ইসলামী দলগুলোর ভোট যেন একটি প্ল্যাটফর্মে একীভূত হয়। একইসঙ্গে অন্যান্য দেশপ্রেমিক ও মানবতাবাদীদের নিয়েও বৃহৎ নির্বাচনী সমঝোতার একটি পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। আশা করি, আল্লাহর রহমতে তা সফল হবে।