আমকে শিল্পে রূপ দিতে হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোরামের চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আম থেকে জুস, আচারসহ বহুবিধ প্রক্রিয়াজাত পণ্য হিসেবে ব্যবহার করে পুরো বছর জুড়ে আমের ব্যবহারের মাধ্যমে আমকে শিল্পে রূপ দেওয়া সম্ভব। চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি আম গবেষণা কেন্দ্র থাকলেও খুবই হতাশাজনক বিষয় হচ্ছে এই গবেষণা কেন্দ্র আমকে শিল্পে রূপ দেওয়ার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও সরকার কিংবা চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতীতের কোন জনপ্রতিনিধি আমের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। প্রতি বছর ২৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের মধ্যে ১০ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়। অবশিষ্ট আম পরিকল্পিত পদক্ষেপের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। উৎপাদিত আমের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী চাঁপাইনবাবগঞ্জে যুব কর্মসংস্থান ও আম রপ্তানি শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। আম রপ্তানি ছাড়াও এই জেলায় বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন হয়ে আসছে। কৃষিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাবাসীর অবদান অনস্বীকার্য।
আগামী দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাংগো ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জনগণ সুযোগ দিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোরাম যুব কর্মসংস্থান ও আম রপ্তানি শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে। কৃষক ও উদ্যোক্তাকে একই প্লাটফর্মে এনে মধ্যস্বত্ব ভোগীদের হাত থেকে রক্ষা করে কৃষকদের লাভবান করতে হবে। এজন্য তিনি, একটি স্মার্ট অ্যাপস তৈরির ঘোষণা দেন। নতুন নতুন আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের নিয়ে একটি আম প্রদর্শন মেলার আয়োজন করার পাশাপাশি সরকারের সহায়তায় পরিবহন ব্যবস্থাপনা সহজ করে আমের বাজারজাতের মাধ্যমে আমের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে। নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণের পাশাপাশি বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে তিনি উপস্থিত যুব উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোরাম কর্তৃক অনুষ্ঠিত সেমিনারে "আমের মানোন্নয়ন ও বাজার সম্প্রসারণ" বিষয়ে উপস্থাপনা করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব হর্টিকালচারের প্রফেসর ড. জসিম উদ্দিন, "লোকালি ম্যাংগো এক্সপোর্টের সমস্যা ও সমাধান" বিষয়ে করণীয় উপস্থাপনা করেন নওয়াবী ম্যাংগোর ফাউন্ডার ইসমাইল খান শামীম, "আম শিল্প এবং প্রসেসিং" বিষয়ে উপস্থাপনা করেন কৃষি উদ্যোক্তা মো. মুনজের আলম মানিক, "এফ-কমার্স ও ব্র্যান্ডিং" বিষয়ে উপস্থাপনা করেন শরীফ আবু হায়াত অপু, "আম রপ্তানি গাইডলাইন" বিষয়ে উপস্থাপনা করেন এক্সপোর্ট সেবার জাহিদ হাসান। সেমিনারে ৪ শতাধিক যুব উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন।