ফেনী সংবাদদাতা : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আমীর আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, যুগের নব্য ফেরাউন শেখ হাসিনার উৎখাতের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। আল্লামা সাঈদী সহ যত আলেম ওলামাকে হত্যা করেছে তাদের মাগফিরাত কামনা করছি। সংস্কারের নামে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কোন আইন জাতি কখনো মেনে নেবে না। তিনি বিতর্কিত নারী কমিশন বাতিল করার আহ্বান জানান। গণহত্যার বিচার এবং সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে নির্বাচন দিন। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা জুলাই বিপ্লবের সাথে সুস্পষ্ট মোনাফেকি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে খেলাফত মজলিস ফেনী জেলা শাখা আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের জেলা সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে উক্ত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা আফজালুর রহমান, কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, অপর সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবু সাঈদ নোমান ও কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল হান্নান, জেলা হেফাজতে ইসলামের আমীর ওমর ফারুক, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এয়াকুব নবী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আবদুর রহিম,জলা ইসলামী আন্দোলন সেক্রেটারি মাওলানা একরামুল হক ভূঁইয়া,জেলা খেলাফত মজলিসের সহ-সভাপতি মাওলানা হাকিম আমীর হোসাইন, সহ-সভাপতি মাওলানা নাজমুল আলমসহ বিভিন্ন উপজেলা সভাপতিগণ। সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ক্বারী আবু বকর ছিদ্দিক, ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল আজিজ, আন্তর্জাতিক কেরাত সম্মেলন সংস্থার সভাপতি মাওলানা আবদুল ফাত্তাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, গত পনের বছর আমাদের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে শতশত মামলা দায়ের করা হয়েছে। বছরের পর বছর আমাদের নেতাকর্মীদের উপর জেল জুলুম চলেছে। আমাদের কোন মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি। অথচ অনেক দলের নেতা কর্মীদের সকল মামলা এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংস্কারের নামে সময় ক্ষেপণ করা যাবে না। দ্রুত সংস্কার এবং ফ্যাসিবাদের বিচার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে।
বিগত ১৬ বছর ফ্যাসিবাদী সরকার এদেশের মানুষের সকল অধিকার লুন্ঠন করেছিল। এখনো যারা ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করতে চায় তাদেরকে শাপলা চত্বরে কিভাবে পাখির মত গুলী করে হত্যা করেছিল শেখ হাসিনা ছিল বিকারগ্রস্ত। তার পুনর্বাসন এদেশের মানুষ বরদাস্ত করবে না। বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোন নির্বাচন হবে না। আগস্ট বিপ্লবের চেতনা বাস্তবায়ন না করলে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে আল্লাহু আকবার শ্লোগান এর চেতনা যারা বিনষ্ট করতে চায় তাদেরকে জাতি ক্ষমা করবে না। আগামীর বাংলাদেশে তৌহিদী জনতার স্প্রিটকে ধারণ করে ক্ষমতায় থাকতে হবে, ক্ষমতায় যেতে হবে। সংবিধান সংশোধনের নামে বহুত্ববাদী সংশোধন এই জাতি মানবে না। কুরআন বিরোধী কোন আইন আমরা বরদাস্ত করবো না। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যরা তৃতীয় লিঙ্গের প্রজাতি। এরা হাসিনা যা করতে সাহস করেনি তা করতে উদ্যত হয়েছে। ৩রা মে এর আগে নারী কমিশনের প্রস্তাব বাতিল করে এই কমিশন বাতিল করতে হবে। নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম আমরা কখনো সৃষ্টি হতে দিব না। আগামীর বাংলাদেশ ভারতের আধিপত্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। সরকার প্রধান এদেশের মানুষ যে ভালোবাসা দিয়েছে তার মূল্যায়ন করুন নতুবা ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলতে দেশবাসী এক মুহূর্ত ভাববে না। সকল ইসলামী দলকে বলতে চাই, সকল মতপথ ভুলে ঐক্যবদ্ধ ইসলামী দেশ গঠনের জন্য এগিয়ে আসুন। বিএনপি এবং এনসিপির উদ্দেশে বলেন, ২৪ বিপ্লবের ভিত্তিতে ঐক্য গড়ে তুলতে চাই। সকল ইসলামপন্থীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হলে মানবরচিত তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে সম্ভব নয়।