পাইকগাছায় জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে জমজমাট ভাবে অবৈধ সুদের ব্যবসা ও ভেজাল স্বর্ণের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধান করে জানাযায় পাইকগাছা উপজেলা সদরে ৪৫ টি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। যার অধিকাংশ স্বর্ণের ব্যবসায়ীরা সুদের ব্যবসার পাশাপাশি বন্ধকি ব্যবসা ও ভেজাল স্বর্ণের ব্যবসা জমজমাট ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। এসব স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ডিসি লাইসেন্স, এসিড লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্স থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ স্বর্ণ ব্যবসায়ি এসিড লাইসেন্স না করে ইচ্ছে মত নাইট্রিক এসিড ব্যবহার করছেন। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তা- ছাড়া অনেকেই শুধু মাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে অবৈধ স্বর্ণের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু দিন আগে বাতিখালী গ্রামের জৈনকা গৃহবধূ মেরিনা বেগম নিউ সেনকো জুয়েলার্সের মালিক দেবব্রত প্রসাদ সেন এর কাছে দুই ভরি দু আনা ওজনের স্বর্ণালাংকার বন্ধক রেখে ৫০ হাজার টাকা নেন। যার শতকরা মাসিক সুদের হার তিন টাকা। অত:পর উক্ত দেবব্রত প্রসাদ সেন উক্ত বন্ধকী স্বনালংকার পাইকগাছা বাজারের পিয়া জুয়েলার্সের মালিক মহিতোষ কুমার দত্তের কাছে প্রতিমাসে হাজারে ২৫ টাকা সুদে উক্ত স্বর্ণ বন্ধক রাখেন। তৎপরবর্তীতে পিয়া জুয়েলার্সের মালিক মহিতোষ উক্ত স্বর্ণালংকার নিয়ে তিনি কপিলমুনি বাজারের উত্তম জুয়েলার্সের মালিক মুরারি দত্তের কাছে মাসিক প্রতি হাজারে ২২ টাকা সুদে বন্ধক রাখেন। এ অবস্থায় গৃহবধূ মেরিনা বেগম নিউ সেনকো জুয়েলার্সের মালিক দেবব্রত প্রসাদ সেন, পিয়া জুয়েলার্সের মালিক মহিতোষ কুমার দত্ত ও কপিলমুনি বাজারের উত্তম জুয়েলার্সের মালিক মুরারী দত্তের কাছে বিভিন্ন গন্য মান্য ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের নিয়ে দেন দরবার করে

৭৩ সপ্তাহের সুদ ৫৪ হাজার ৭ শত ৫০ টাকার স্থলে ৫৭ হাজার টাকা সুদ সহ আসল ৫০ হাজার টাকা দিয়ে স্বর্ণালংকার ফেরত নিয়েছেন। গৃহবধূ মেরিনা বেগম অভিযোগ করে বলেছেন, বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী দেবব্রত প্রসাদ ও মহিতোষ কুমার দত্ত অনেকের স্বর্ণ বন্ধক রেখে তা আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি সুদ সহ আসল টাকা নিয়ে বন্ধকি সোনার পরিবর্তনে ভেজাল স্বর্ণালংকার প্রদানেরও অভিযোগ রেয়েছে।

এতে বহু সহজ সরল গৃহবধূ নিঃস্ব হয়েছে। অনেকেই থানায় বা সমিতিতে অভিযোগ করে দিনের পর দিন হয়রানি হচ্ছেন। অনেকেই স্বর্ণ বন্ধক রেখে যে টাকা নেন তার দিগুন, তিনগুন টাকা লাভ সুদ হওয়ায় তাদের স্বর্ণালংকার ফেরত নিচ্ছেন না। পাইকগাছা স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম দত্ত জানান, অতীত কাল থেকে স্বর্ণ ব্যবসার সাথে সুদের ব্যবসা চলছে। আর বন্ধক রাখা জুয়েলার্সের মালিক নিয়ম অনুযায়ী বন্ধকের মেয়াদ পার হওয়ার পর বন্ধক রাখা সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয় বা স্বর্ণালংকার ভেঙ্গে ফেলে নতুন স্বর্ণালংকার তৈরী করা হয়। পাইকগাছার সরল গ্রামের ইমন মিস্ত্রি এ প্রসঙ্গে বলেন, স্বর্ণের দোকানে সুদের ব্যবসা ও নাইট্রিক এসিড বে আইনী হলেও বছরের পর বছর ধরে তারা এ ব্যবসা করে চলেছে।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মাসে তিন বা ৫ শতাংশ লাভ মানে বছরে ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ সুদ। এত বেশী সুদ কোন বৈধ প্রতিষ্ঠান ও নিতে পারে না, যা- স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন। এই অবৈধ চড়া সুদের ব্যবসার কারনে এক শ্রেণির স্বর্ণ ব্যবসায়ী আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। তারা অবৈধ টাকার পাহাড় গড়ে তুলে প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলে দেখিয়ে ধরাকে সরাজ্ঞান করছেন। তাই তাদেরকে প্রতিহত করা প্রয়োজন বলে ভুক্তভোগী মহল দাবী তুলেছেন। এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীনের সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, , জুয়েলারি দোকানে স্বর্ণ বন্ধক রেখে সুদ নেয়া সম্পূর্ণ বেআইনী। তার উপর পুরো স্বর্ণ বাজেয়াপ্ত করা আরো অন্যায়। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন তিনি।