সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ট লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক, সৃজনশীল সাহিত্য পত্রিকা প্রেক্ষণের সম্পাদক অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল মোমেন গত শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটায় ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তিকাল করেছেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ১ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গতকাল শনিবার বাদ জোহর রাজধানীর শ্যামলীর বাদশা ফয়সাল স্কুল জামে মসজিদে মরহুমের জানাজা শেষে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
কর্মজীবনে খন্দকার আব্দুল মোমেন দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি নর্দান ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটি, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং তামিরুল মিল্লাত মাদরাসার বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। তিনি সাহিত্য সংস্কৃতিকর্মেকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন বাংলা সাহিত্য পরিষদের পরিচালক ও সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
খন্দকার আবদুল মোমেন এর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান গতকাল শোকবাণী দিয়েছেন।
শোকবাণীতে তিনি বলেন, খন্দকার আবদুল মোমেন দেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি দেশের শিক্ষা বিস্তারে এবং সুস্থ ধারার সংস্কৃতি বিকাশে বিরাট অবদান রেখে গিয়েছেন। তাঁর ইন্তিকালে আমরা ইসলামী আন্দোলনের একজন নিবেদিত প্রাণ দাঈকে হারালাম। তিনি ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে গিয়েছেন এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রচার ও প্রসারে তাঁর অনেক অবদান রয়েছে। আমি তাঁর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
শোকবাণীতে তিনি আরও বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁকে ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাঁর কবরকে প্রশস্ত করুন। তাঁর গুনাহখাতাগুলোকে ক্ষমা করে দিয়ে নেকিতে পরিণত করুন। কবর থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রত্যেকটি মঞ্জিলকে তাঁর জন্য সহজ, আরামদায়ক ও কল্যাণময় করে দিন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন এবং তাঁর শোকাহত পরিবার-পরিজনদেরকে এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।
এ দিকে অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল মোমেনের ইন্তিকালে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি আবুল আসাদ, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমির সভাপতি আবেদুর রহমান, সেক্রেটারি ইবরাহীম বাহারী। এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন কবি মোশাররফ হোসেন খান, বিশিষ্ট সাহিত্য সংষ্কৃতি সংগঠক অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মানছুর, ড.মনোয়ার হোসেন, সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহবুব মুকুল ও সহকারী সেক্রেটারিবৃন্দ যথাক্রমে আল্লামা ইকবাল, এম এ তাওহিদ ও আব্দুর রহমান, কথাসাহিত্যিক হারুন ইবনে শাহাদাত।
নেতৃবৃন্দ বলেন, অধ্যাপক মোমেন বিশুদ্ধ ধারার সাহিত্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। সর্বোপরি সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের নিবেদিতপ্রাণ উজ্জ্বল এক নক্ষত্র, নিরহংকারী খ্যাতিমান মানুষ ছিলেন। তিনি সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশ ও বিপ্লবের অগ্র সৈনিক, তাঁর সাহিত্যচর্চা, মানবিক বোধ, নৈতিক চেতনা, সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যের এক নিরবচ্ছিন্ন অনুপ্রেরণা। তিনি দেশ জাতির কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করেছেন, বিশেষকরে সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশে অসামান্য অবদান রেখেছেন। আমরা একজন অভিভাবক হারালাম।
শোকবার্তায় তারা মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তারা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করেন, আল্লাহ যেন মরহুমের নেক আমল সমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতবাসী করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য্য ধারণ করার তৌফিক দান করেন।