নরসিংদীর বেলাবতে পুলিশ-সন্ত্রাসী দুই সহোদরের সন্ত্রাসী হামলায় মনোয়ারা এবং সেলিনা নামে দুই নারী এখন পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বেলাব থানা পুলিশ এবং আদালতের দারস্থ হয়েও তারা এ হামলার কোনো ন্যায় বিচার পায়নি। এর মূল কারণ হলো - হামলাকারী দুই সহোদরের মধ্যে এক ভাই পুলিশ কনস্টেবল এবং আরেক ভাই স্থানীয় সন্ত্রাসী। তাদের একদিকে সন্ত্রাসী প্রভাব এবং অপরদিকে পুলিশি প্রভাব। যেকারণে তারা অপরাধ করেও সহজে পার পেয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, পুলিশের এক কনস্টেবল এবং তারই এক সন্ত্রাসী সহোদরের দাপটে তটস্থ নরসিংদীর বেলাব উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের বাঙ্গালগাঁও গ্রামের সাধারণ মানুষ। ওই গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে এক আতঙ্কের নাম সাইদ - সায়েম। তাদের একক আধিপত্যে এলাকার সাধারণ মানুষ রীতিমতো ভীতসন্ত্রস্ত।

অভিযোগ রয়েছে, বাঙ্গালগাঁও গ্রামের মৃত: নূর আহম্মেদ এর ছেলে আবু সাইদ রায়হান(৩২) ওই এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং তার ছোট ভাই সায়েম আলমাছ(৩০) বর্তমানে একজন পুলিশের একজন কনস্টেবল। একদিকে পুলিশি দাপট এবং অপরদিকে সন্ত্রাসী দাপট, উভয় মিলিয়ে ওই এলাকাজুড়ে এক আতঙ্কের নাম সাইদ-সায়েম।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সায়েম পুলিশের চাকরি করলেও তার এলাকায় সবধরণের অপরাধ নেটওয়ার্কের সঙ্গে সে সর্বত্র বিরাজমান থাকে। এমন কি ক্ষেত্র বিশেষে চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে এসে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।

সায়েমের বড় ভাই সাইদ ওরফে আবু সাইদ রায়হান এলাকার চিহ্নিত একজন সন্ত্রাসী। তার দাপটে তটস্থ এলাকাবাসি। সে ওই গ্রামে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে মানুষের ওয়ারিশ সম্পত্তি ক্রয় করে এবং প্রভাব খাটিয়ে সেগুলো সন্ত্রাসী বাহিনীর মতো দখল করা ছাড়াও বহু অপকর্মের সঙ্গে সে জড়িত। তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ বাধা হয়ে দাড়ালে একদিকে সন্ত্রাসী হামলা এবং অপরদিকে পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হয়। অথচ সাইদ-সায়েম ওই এলাকায় সব অপকর্মের মূল হোতা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কেউ আইনি ব্যবস্থা নিয়ে টিকে থাকতে পারেনা। ওদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা করলেও মামলার তদন্ত রিপোর্ট পুলিশি প্রভাব খাটিয়ে ওদেরকে নির্দোষ বানানো হয়। ওই এলাকায় খোজ নিলে তাদের বিষয়ে এমন সব তথ্য বেরিয়ে আসে।

গত বছরের ১৬ অক্টোবর বুধবার সকাল ৯টার দিকে সাইদ-সায়েম সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় একই গ্রামের মনোয়ারা এবং সেলিনা নামে দুই মহিলা গুরুতর আহত হয়েছেন। বেধরক পিটিয়ে তাদের পায়ের হাড় ভেঙ্গে ফেলেছে। তারা এখন অনেকটা পঙ্গুত্বের জীবন অতিবাহিত করছে। এই ঘটনায় তারা মামলা করলেও সাইদের ছোট ভাই সায়েমের পুলিশি প্রভাবে মামলার তদন্ত রিপোর্ট সঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন আহত দুই মহিলার স্বজনেরা। এব্যাপারে জানতে চাইলে আবু সাইদ রায়হান জানান, যা জানার তা আপনারা সাংবাদিক হিসেবে তদন্ত করে জানেন।