মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং টেকসই উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য প্রকল্পের (এসসিএমএফপি) প্রকল্প পরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধূরী বলেছেন, দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে চিংড়ি সেক্টর এবং চিংড়ি চাষীদের বাঁচাতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার চিংড়ি সেক্টরকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়েছি। বিশেষ করে যারা এ সেক্টরে কাজ করছে- করবে সরকার সব সময় তাদের সাথে রয়েছে। চিংড়ি সেক্টরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য মৎস্য দপ্তরের দরজা সব সময় খোলা রয়েছে। সোমবার দুপুরে খুলনার সিএসএস আভা সেন্টারে অনুষ্ঠিত সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের ‘প্রোসেস অ্যান্ড রেজাল্ট ডেমোন্সট্রেশন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। মৎস্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এসিআই এগ্রোলিঙ্ক লিমিটেড এ কর্মশালার আয়োজন করে। মৎস্য অধিদপ্তরের সহায়তায় এসিআই এগ্রোলিংক লিমিটেড রোগমুক্ত চিংড়ির পোনা চাষ এবং কন্টাক্ট ফার্মিং এর লক্ষ্যে ‘সাস্টেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ নামক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করছে। কর্মশালায় মৎস্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম সভাপতিত্ব করেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী আরো বলেন, এসসিএমএফপি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। সুতরাং সরকারের উদ্যোগ ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না, চিংড়ি সেক্টরকে বাঁচাতে হবে। চাষীদের প্রশিক্ষণসহ নিয়ম-নীতির মধ্যে আনতে তিনি ফিশফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশন (ফোয়াব) এবং বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সহযোগিতা কামনা করেন। এসিআই এগ্রোলিঙ্ক উল্লিখিত প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এবং সফলতা পাওয়ায় তিনি এসিআই এগ্রোলিঙ্কের প্রশংসা করে ৯ কোটি পিএল থেকে এসিআই ৯০ কোটি পিএল উৎপাদন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে যে সকল অসাধু ব্যবসায়ীরা অনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য অসৎ পথ অবলম্বন করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় এসিআই এগ্রোলিংক একটি সুপার এসপিএফ (স্পেসিফিক প্যাথোজেন ফ্রি) পি এল (পোস্ট লার্ভা) নার্সারি স্থাপনা করেছে। যেখানে ১০-১২ দিনের এসপিএফ পোনা সংগ্রহ করে ৫৮ দিন নার্সিং করা হয় (এসপিএফ পোনা হলো নির্দিষ্ট ভাইরাস মুক্ত পোনা)। এই নার্সারি থেকে চিংড়ি চাষিরা সুপার এসপিএফ পোনা পাবে, যা চিংড়ির রোগ ও মৃত্যুহার কমাতে এবং চিংড়ির ভালো উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। ফলাফলস্বরূপ, চাষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং এসিআই এগ্রোলিংক চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প হিসাবে অতিরিক্ত কাঁচামালের যোগান পাবে। যার ফলে উচ্চ রপ্তানি আয় হবে এবং এই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।