ইঞ্জিন বিকল হয়ে তিন দিন ধরে সাগরে ভাসতে থাকা এফবি মায়ের দোয়া নামের একটি ফিশিং বোটের আট জেলেকে জীবিত উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। সমুদ্রে টানা তিন দিন মৃত্যুভয় নিয়ে ভেসে থাকার পর নিরাপদে তীরে ফেরায় জেলেদের পরিবারে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া -এর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কোস্ট গার্ড জানায়, গত ১৪ আগস্ট মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সমুদ্রে পাড়ি জমায় এফবি মায়ের দোয়া ফিশিং বোটটি। বোটটিতে মোট আটজন জেলে ছিলেন। যাত্রার কিছুক্ষণের মধ্যেই ইঞ্জিনে হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বোটটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর সমুদ্রে ভেসে থাকতে থাকে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তারা চরম অনিশ্চয়তা ও ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। ধীরে ধীরে তাদের খাবার ও পানির মজুতও কমে আসতে থাকে। টানা তিন দিন সাগরে ভেসে থাকার পর অবশেষে রবিবার সকালে বোটটি মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসে। তখন এক জেলে দ্রুত কোস্ট গার্ডের জরুরি সেবা নম্বর ১৬১১১-এ ফোন করে সাহায্যের আবেদন জানান।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সমুদ্রে টহলরত কোস্ট গার্ডের জাহাজ স্বাধীন বাংলা দ্রুত উদ্ধার অভিযানে নামে। অল্প সময়ের মধ্যেই মোংলা ফেয়ারওয়ে সংলগ্ন নম্বর-৫ বয়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় বোটটি শনাক্ত করা হয়। দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত অভিযানে আট জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ করা হয়। ফিশিং বোটটিকে নিরাপদে হাড়বারিয়া সংলগ্ন নদীর তীরে পৌঁছে দেওয়া হয়।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন– আব্দুর রাজ্জাক, রাকিব, ফারুক, কামাল, আলম, জাকারিয়া, সজীব ও রাকিব। তারা পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তিন দিন সমুদ্রে আটকে থাকার পর তারা জীবিত ফিরে আসায় পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি নেমে এসেছে।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সবসময় উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। জরুরি মুহূর্তে জেলেদের সহায়তা ও উদ্ধার আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, কোস্ট গার্ড শুধু উদ্ধার অভিযানেই সীমাবদ্ধ নয়, পাশাপাশি সমুদ্রগামী জনগণের নিরাপত্তা, সচেতনতা বৃদ্ধি, অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায়ও নিয়মিত ভূমিকা পালন করে আসছে।