মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ন্যায্য অধিকার ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে বুধবার (১৯ শে নভেম্বর) যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরাম (এমটিএফ)-এর উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন এমটিএফ যশোর শাখার সভাপতি মোঃ হাসানুজ্জামান এবং সঞ্চালনা করেন মোঃ সালাউদ্দিন সেলিম।
বক্তারা জানান, দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগ নির্ণয়ে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআইসহ সব ধরনের ডায়াগনস্টিক পরীক্ষায় তাদের দক্ষতা চিকিৎসকদের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। করোনা মহামারী, ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব, নিপাহ ভাইরাসসহ প্রতিটি জনস্বাস্থ্য সংকটে টেকনোলজিস্টরা ছিলেন সম্মুখসারির যোদ্ধা। তবুও দীর্ঘদিন ধরে তারা ১০ম গ্রেড থেকে বঞ্চিত যা বক্তাদের মতে অত্যন্ত বৈষম্যমূলক এবং হতাশাজনক।
বক্তারা বলেন, অন্যান্য ডিপ্লোমাধারী পেশাজীবীরা ১০ম গ্রেড পেলেও স্বাস্থ্যব্যবস্থার মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা বছরের পর বছর অবহেলিত। কেন তাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়িত হচ্ছে না, সরকারের স্পষ্ট জবাব দিতে হবে।
গত বছর বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এবং পরে জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের আন্দোলনের পর মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ঘোষণা দিয়েছিলেন যে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেড অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। বক্তারা জানান, এই আশ্বাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে এতদিন তারা কর্মবিরতিসহ কঠোর কোনো আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করেননি।
তারা দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, এটাই আমাদের শেষ ধৈর্য। আর কোনো আশ্বাস নয়, এবার চাই লিখিত সিদ্ধান্ত।
মানববন্ধনে আরও সতর্ক করা হয় যে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যদি নতুন করে ফাইল ওয়ার্কিং বা কোয়ারীর নামে বিলম্ব সৃষ্টি করা হয়, তাহলে সারাদেশের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবেন। বক্তাদের মতে, এতে স্বাস্থ্যসেবা অচল হয়ে পড়লে তার সম্পূর্ণ দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে।
জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থা সচল রাখতে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের প্রতি অবিলম্বে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান বক্তারা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফার্মাসিস্ট নেতা রতন কুমার, মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম, ফিরোজ আহমেদ, মোঃ রাজু আহমেদ (সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, তারুণ্যের শক্তি–ফার্মাসিস্ট পরিষদ)। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চঞ্চল হোসেন, মোহাম্মদ রায়হান, তারেক পারভেজ, মোশাররফ, আনিসুর, জাহিদ, মাসুদ, মাহদী, রিমন খান, মনিরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
টেকনোলজিস্ট নেতাদের মধ্যে ছিলেন মো. নুরুজ্জামান, মোঃ রাকিবুল ইসলাম, মোঃ ইবনে মুস্তাকিমসহ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরাম যশোরের অন্যান্য সদস্যরা।