চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর মইজ্জারটেকে অবস্থিত এস. আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড কারখানায় ‘বিনা কারণে’ ৫৬ জন কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কারখানার সামনে তারা অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করেন।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ওই দিন সকালে কর্মস্থলে এসে তারা কারখানার মূল গেইটে নিজেদের নাম ও আইডি নম্বরসহ ছাঁটাইয়ের একটি তালিকা দেখতে পান। নোটিশে বলা হয়, তারা আর প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী নন। তবে ছাঁটাইয়ের কোনো কারণ সেখানে উল্লেখ করা হয়নি।

ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের ভাষ্য, “কারখানায় স্বাভাবিকভাবে উৎপাদন চলছে। প্রতিদিনের মতো মালামাল পরিবহনের গাড়িও চলছে। অথচ আমাদের কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একই গ্রুপের অন্যান্য ইউনিটে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও কর্মচারীরা বহাল রয়েছে। আমাদের অপরাধটা কী, তা জানতে চাই।”

তাদের অভিযোগ, কয়েক মাস আগে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট হোসেন রানার সঙ্গে বেতন বাড়ানো নিয়ে বাকবিত-া হয়। তারা দাবি করেন, হোসেন রানা দক্ষিণ জেলা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার ও কুসুমপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শ্রমিকদের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধ্য করতেন। কেউ অংশ নিতে না চাইলে তাদের 'টার্গেট' করা হতো। এই কারণে তাদের চাকরি হারাতে হয়েছে বলে দাবি শ্রমিকদের। তারা অ্যাড. হোসেন রানার পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছেন।

ছাঁটাই হওয়া কর্মচারীরা জানান, “৮-১০ বছর ধরে আমরা এই কারখানায় কাজ করছি। পরিবার-পরিজন নিয়ে চলা একমাত্র আয়ের উৎস ছিল এই চাকরি। হঠাৎ করে ছাঁটাই হওয়ায় আমরা দিশেহারা। আমরা চাই, কর্তৃপক্ষ আমাদের পুনর্বহাল করুক, নয়তো আমাদের বিক্ষোভ আমরণ অনশন পর্যন্ত গড়াবে।”

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে উৎপাদন কার্যক্রমে সমস্যার কারণে মালিকপক্ষ আর্থিক সংকটে পড়েছে। গত ১১ মাস পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান লোকসান গুণেও শ্রমিকদের বেতন দিয়েছে। বর্তমানে অপারগতার কারণে কিছু শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। এর সঙ্গে কাউকে ব্যক্তিগতভাবে লক্ষ্য করার প্রশ্নই ওঠে না।” তিনি আরও জানান, “স্থায়ী কর্মীদের দেনা-পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাদের একজন রাজি হলেও অন্যরা আপত্তি জানিয়েছেন।”