খুলনা মহানগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় গত (২০ এপ্রিল) রোববার সকালে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে অংশ নেয়া অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন ধরা-ছোয়ার বাইরে রয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
রূপসা থানা পুলিশ জানায়, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের মিছিলের ছবির সূত্র ধরে ইতোমধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাগমারা গ্রামের মৃত নিয়ামত মীরের রড় ছেলে মামুন মীর (৩২) কে রূপসা কলেজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নগরীর হরিণটানা থানা একটি নাশকতা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয় । তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। বুধবার তাকে খুলনা জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে মিছিলে অংশগ্রহণকারী বাকি নেতা-কর্মীরা এখন পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাদের বর্তমানে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
অপরদিকে যারা ওই ঝটিকা মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন তদের অনেকের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। রূপসা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, খুলনা মহানগরীর জিরোপয়েন্ট এলাকায় ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণ করা মামুন মীর নামে এ যুবককে আটক করা হয়েছে। হরিণটানা থানায় একটি নাশকতা মামলায় তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান থানার এ শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এস এম মুজিবুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মো. আল আমিন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার তাকে নগরীর ময়লাপোতা এলাকা থেকে আটক করে। পরবর্তীতে বুধবার বিকেলে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতে পুলিশের দেওয়া তথ্য উপাত্ত থেকে জানা গেছে, মুজিবুর রহমান দেশে অবস্থান করে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দেশে-বিদেশে পালিয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ স্থানীয় নেতা শেখ হেলাল, শেখ জুয়েল, এস এম কামাল, কাজি আমিনুল হক, ঠিকাদার আশরাফ, জেলা আওয়ামী লীগের কামরুজ্জামান জামাল, ঠিকাদার জাকির, খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সানাউল্লাহ নান্নু এবং অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জনের সাথে মোবাইলে বিভিন্ন নামে হোয়্যাটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও জুম এ্যাপসের মাধ্যমে গোপন আইডি খুলে তাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। তাদের দেওয়া নির্দেশনা মোতাবেক সরকারকে উৎখাত এবং দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর নীলনকশা বাস্তবায়নের যড়যন্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
এছাড়া মুজিবুর রহমান তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুলনাসহ সারাদেশে বর্তমান সরকার বিরোধী মিছিল-মিটিং করানোর উস্কানিদাতা এবং অর্থদাতা। তার মদদে পতিত সরকারের দোসর কতিপয় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সন্ত্রাসী এবং কিশোর গ্যাং নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের সরকার বিরোধী প্রচারণায় লিপ্ত রয়েছে। যা রাষ্ট্রবিরোধী এবং যড়যন্ত্রের সামিল।