জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা। এসময় তারা আন্দোলনর শহীদের স্মৃতিচারণ করে এই সরকারের শাসন আমলেই জুলাই গণহত্যার বিচার শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেন। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সকলকে কাজ করার আহবান জানান। দেশে চাঁদাবাজি ও লুটাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাড়াতে বলেন উপদেষ্টারা।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সারা দেশের মতো নারায়ণগঞ্জের ছাত্র-জনতাও প্রাণপণ লড়াইয়ে নেমেছিলো রাজপথে। আন্দোলনের সময় ঢাকা-ট্টগ্রাম মহাসড়ক ও নগরীর বি বি রোডে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী নেতাকর্মীর ভয়ংকর সব মারণাস্ত্রের হামলায় শহীদ হন অনন্ত ৫৪ জন। এর মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা ২১ জন।
সোমবার বিকেলে গণঅভ্যুত্থানেশহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে নারায়ণগঞ্জে হাজীগঞ্জে দেশের প্রথম জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন করেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা। এসময় আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র- জনতাসহ রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের স্বজনেরাও।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, যে গতিতে বিচার এগিয়ে চলছে আমরা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি, অন্তর্র্বতী সরকারের আমলেই জুলাই গণ-হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেষ হবে। এসময় তিনি দেশে চলমান পরিস্থিতিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মতো দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চাঁদাবাজ-লুটাদেরর বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর আহবান জানান।
শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বৈষম্যহীন দেশ গড়ার আন্দোলনে স্বৈরাচার স্বাধীনদেশে ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। তাই জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ রাখতে হলে, দেশে ন্যায় বিচার ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় দল ও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবাযু উপদেষ্ট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, র্দীঘ ৩৬ দিন দেশের ছাত্রজনতা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে স্বৈারাচার মুক্ত করে। এই আন্দোলনে জনপথে জীবন দিয়েছে নারায়ণগঞ্জে ৫৬ জন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ২১ জন। আহত হয়েছে ৩৭০ জন। আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছে, আহত হয়েছে তাদের একটি উদ্দ্যোশ ছিলো। তাহলো বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার। যারা জীবন দিয়ে বা আহত হয়ে স্বৈরাচার মুক্ত করলো তাদেরে স্বরন করার জন্য নারায়ণগঞ্জে প্রথম জুলাই শহীদ স্মতিস্তম্বভ নির্মাণ করে তাদের স্বরন করা হলো। তিনি বলেন, দেশে ন্যায় বিচার ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় দল ও ব্যক্তির স্বার্থে উঠে গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ গতে তুলতে হবে। তবেই শহীদের আত্মত্যাগের স্বার্থকতা আসবে।
শিল্প ও গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী ও মুজিবাদি শাসনের বিরুদ্ধে র্দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের লড়াই সংগ্রামের এক পর্যায়ে এদেশের তরুন ছাত্রজনতা বৈষশ্যের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে এসে পাচঁ আগষ্ট দেশকে ফ্যাসিবাদের বিদায় ঘটিয়ে বিজয় নিয়ে আসে। গনঅভ্যুন্থানের মধ্যদিয়ে এই অন্তবর্তী সরকার আসে। তিনি বলেন, গনভবনকে ফ্যাসিস্টের জাদুঘর হিসাবে গড়ে তোলা হবে। স্বৈরাচারের ঠিকানা সংরক্ষন করে দেশের মানুষকে দেখানো ব্যবস্থা করা হবে। এই ভবন থেকে ফ্যাসিবাদের প্রধান দোসড় কি ভাবে নির্দেশ দিয়ে দেশের মানুষকে গুম, খুন করে , আয়নাঘর বানিয়ে মানুষকে নির্যাতন করেছে।
এছাড়া অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরি রফিকুল আবরার, জ¦ালানী উপদেষ্টা ফাওজুল কবীর খান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা , পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ জুলাই আন্দোলনে শহীদ নিহতের পরিবারের স্বজন ও আহতরা। পরে পরিবশ রক্ষায় গাছের চারা রোপন করেন উপদেষ্টারা।