জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জন ও প্রায় এক হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে চট্টগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলম এবং তার স্ত্রী ইসমাত আরার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে (দুদক)।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই কার্যালয়ের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দিদারুল আলমের আয়কর নথি পর্যালোচনায় তার নামে ২৪ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকার স্থাবর এবং ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অস্থাবরসহ মোট ৫৭ কোটি ৬০ লাখ ৮৯ হাজার টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। ২০১০-২০১১ থেকে ২০২৪-২০২৫ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয় দেখানো হয়েছে ৬৯ কোটি ৬২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা এবং ব্যয় ১৫ কোটি ৯৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ ব্যয় বাদে সঞ্চয় দাঁড়ায় ৫৩ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১০ কোটি ৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকার উৎস খুঁজে পায়নি দুদক। এছাড়া অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঘোষিত সম্পদের চেয়েও ১৩ কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা জ্ঞাত আয় কম রয়েছে।

একইসঙ্গে দিদারুল আলম ২০টি ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে ৪৭৫ কোটি ৯৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা জমা ও ৪৭২ কোটি ৯০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা উত্তোলনসহ মোট ৯৪৮ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা লেনদেন করেছেন, যার উৎস গোপন রাখা হয়েছে বলে দুদক মনে করছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে এর ২৭ (১) ধারা, এর ৫ (২) ধারা এবং এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে, ইসমাত আরার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪-২০১৫ থেকে ২০২৪-২০২৫ করবর্ষ পর্যন্ত তার বৈধ আয় ২ কোটি ৩৮ হাজার টাকা হলেও তার নামে ২ কোটি ৬১ লাখ ১৩ হাজার টাকার স্থাবর এবং ৫৭ লাখ ৯ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে। একই সময়ে তিনি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন। ফলে তার ঘোষিত আয়-ব্যয়ের সঙ্গে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার সম্পদ অসঙ্গতিপূর্ণ বলে দুদক জানিয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও বলা হয়েছে, এই সম্পদ তার স্বামী দিদারুল আলম সংসদ সদস্য থাকাকালীন ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন এবং ইসমাত আরা সেই অবৈধ সম্পদ ভোগ ও দখলে রেখেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং স্বামীর দুর্নীতিতে সহায়তার অভিযোগে র ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।