খুলনা জেলার পাইকগাছার দেলুটির কালিনগর ওয়াপদার বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভদ্রা নদীর প্রবল ¯্রােতে বাঁধে ৪শ’ মিটার এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিগত বছরের ন্যায় যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এ কারণে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ২২নং পোল্ডারের ১৩টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। গত ১৯ আগস্ট দুপুরে বাঁধের উপর দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেলুটি হচ্ছে উপজেলার দ্বীপ বেষ্টিত একটি ইউনিয়ন। ২২ নং পোল্ডার বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়নের একটি অংশ। ৫ টি ওয়ার্ডের ১৩ টি গ্রাম নিয়ে ২২ নং পোল্ডার। এখানে ১০ হাজারের অধিক মানুষ বসবাস করে। তরমুজসহ অন্যান্য কৃষি ফসলের জন্য ২২ নং পোল্ডার অত্যন্ত সমৃদ্ধ। প্রতি বছর এখানে কোটি কোটি টাকার তরমুজ ও অন্যান্য কৃষি ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। পোল্ডারের চারিপাশে নদী থাকায় এবং টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করেন এখানকার মানুষ। প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এখানকার জনসাধারণের। গত বছরের ২২ আগস্ট একই এলাকার বাঁধ ভেঙ্গে ২২ নং পোল্ডার সম্পূর্ণ তলিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন পানি বন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছিল এখানকার মানুষের। তেমন কোন আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় রাস্তায় বসবাস করতে হয় হাজার হাজার মানুষের। বিগত ২০ বছর ধরে এখানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ইতোপূর্বে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি এবং অসংখ্য ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর বাঁধের যেখানে ভেঙ্গে যায় তার ঠিক এক কিলোমিটার উত্তরে এ বছর ও কালিনগর সাধু ঘাটের অমল কবিরাজের বাড়ি থেকে মেরামত সহ ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ স্থাপন জরুরি মনে করছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষ। মানববন্ধনে তারা ত্রাণ নয়, টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি জানান।
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজের সভাপতিত্বে ও ইউপি সদস্য পলাশ কান্তি রায়ের সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সমরেশ হালদার, ইউপি সদস্য রামচন্দ্র টিকাদার, রিংকু রায়, বদিউজ্জামান, মেরি রাণী, দেলুটি ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মোস্তফা সরদার, প্রভাষক কল্যাণ মন্ডল, ধীমান মন্ডল, দ্বিজেন্দ্র নাথ মন্ডল, সন্তোষ গাইন, উৎপল রায়, শিশির মন্ডল, শিমুল মন্ডল, মিহির সরকার, শ্যামল কান্তি রায়, মালতী মন্ডল, শিক্ষার্থী পিয়া মন্ডল ও তৃপা সরকার।