শিবালয় (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা : পদ্মার নৌ চ্যানেলে পণ্যবাহী নৌযান থেকে ইজারাদার অতিরিক্ত টোল আদায় এবং জলদস্যুরা চাঁদা আদায় করছে। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বিরুদ্ধেও চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন ইজারাদার। প্রতিদিন শতাধিক বালুবোঝাই বাল্কহেড ও পণ্যবাহী নৌযান আটকিয়ে চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র। চাঁদা না দিলে চালক ও হেলপারদের মারধর করা হচ্ছে।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলা থেকে গোয়ালন্দ-পাকশী নৌ চ্যানেল দিয়ে প্রতিদিনই সিমেন্ট তৈরির ক্লিঙ্কার, সার, তেল ও বালুবোঝাই নৌযান চলাচল করে। কয়েক মাস ধরে এই নৌপথ জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জলদস্যুরা মাঝনদীতে প্রতিদিন ছয় থেকে আটটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে মহড়া দেয়। ভয়ভীতি দেখিয়ে পণ্যবাহী নৌযান থামিয়ে চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে তারা। এ ছাড়া ইজারাদার অতিরিক্ত টোল নিচ্ছেন বলে শ্রমিকদের অভিযোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি বাল্কহেডের সুকানি জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে বালুবোঝাই বাল্কহেড নিয়ে নিয়মিত ঢাকা ও আরিচা যেতে হয় তাদের। শিবালয় উপজেলার পদ্মার আলোকদিয়া আসার পর পরই জলদস্যুরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। তারা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং মারধর করে। এ ছাড়া ইজারাদার অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন।
ভুক্তভোগী নৌযান শ্রমিকদের অভিযোগ, এসব জলদস্যুর বিরুদ্ধে আগে থেকে প্রশাসন জানলেই কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আগে এই চ্যানেল ব্যবহার করে ইজারাদারকে নৌযান শ্রেণি অনুসারে টোল দিতে হতো এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকা। এখন ছোট-বড় সব নৌযান প্রতি টোল দিতে হচ্ছে তিন হাজার টাকা। প্রতিবাদ করলেই ভয়ভীতি দেখানো হয়।
বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অফিসের তথ্যমতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে গোয়ালন্দ-পাকশী নৌ চ্যানেল ছয় কোটি ৬২ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ইজারা পান ‘গ্রুপ ওয়ানের’ স্বত্বাধিকারী নাছির উদ্দিন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতি টন পণ্য পরিবহনের জন্য নৌযান থেকে আট টাকা ৯৩ পয়সা টোল নিতে পারবেন ইজারাদার। এর বাইরে কোনো চার্জ নিতে পারবেন না। অতিরিক্ত টোল আদায় ও চ্যানেলের বাইরে টোল আদায় করলে শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে ইজারা বাতিল হয়ে যাবে।