চুনারুঘাটে গোস্তের বাজার সিন্ডিকেটের দখলে

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে গরুর গোস্তের বাজারের দখল নিয়েছে একটি স্থানীয় সিন্ডিকেট। আড়ালে থেকেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। এনিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ। সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসন কর্তৃক বেধে দেয়া নিয়মে গোস্তের বিক্রি হলেও চুনারুঘাটে কসাইরাই নির্ধারণ করেন গোস্তের দাম। তাছাড়া এখানে নেই কোন মূল্যতালিকা। ফলে ক্রেতাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে গোস্ত। বাড়তি দাম চুকিয়েও সঠিক পণ্য না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কসাইদের বিরুদ্ধে। গোস্তের সাথে অতিরিক্ত হাড় এবং খাওয়ার অযোগ্য উচ্ছিষ্ট অংশ জোরপূর্বক এবং কৌশলে দিয়ে দেয়া হচ্ছে ক্রেতার ব্যাগে। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলেই কাস্টমারদের সাথে করা হচ্ছে দুর্ব্যবহার, নানাভাবে দেয়া হচ্ছে হুমকি। ক্রেতাদের দমিয়ে রাখতে কসাইদের সাথে এসে যোগ দেয় চারপাশে থাকা গরুর গোস্তের বাজার থেকে নিয়মিত বখরা খাওয়া দালালরা। বাজার মনিটরিংয়ে থাকা চুনারুঘাট পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধেও গোস্তের বাজার থেকে নিয়মিত বখরা খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ক্রেতাদের পক্ষ থেকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চুনারুঘাট পৌরসভায় গোস্তের বিক্রির লাইসেন্স রয়েছে প্রায় ১৩টি। এসব লাইসেন্সধারীরা নিয়মিত ব্যবসায়ী না হওয়া সত্ত্বেও লাইসেন্সের বলে কসাইদের সাথে আতাঁত করে নিয়মিত বখরা আদায় করে নিচ্ছে। ফলে গোস্তে যোগ হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ। আর এসব বাড়তি খরচের বোঝা গিয়ে পড়ছে সরাসরি ক্রেতাদের উপর। চুনারুঘাটের নয়ানী গ্রামের বাসিন্দা মোতাব্বির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, কয়েকদিন আগে কসাই বাছিরের দোকান থেকে আমি এক কেজি গোস্ত ক্রয় করি, বাসায় গিয়ে দেখি কৌশলে তারা খাওয়ার অযোগ্য উচ্ছিষ্ট অংশ দিয়ে দিয়েছে। ফিরে এসে অভিযোগ করলে ক্রয়কৃত গোস্ত রেখে নতুন করে গোস্ত দেওয়ার কথা বলে আমাকে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরাতে থাকে। এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গেলে কসাই বাছির এবং তার সহযোগীরা আমাকে বিভিন্নভাবে গালিগালাজ এবং প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। তাদের কাছে ছুরি-চাকু থাকাতে আমি আর ভয়ে গোস্ত আনতে যাই নি।

তিন বছর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চুনারুঘাটের গরুর গোস্ত বাজারের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে সবকটি লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ রাখে চুনারুঘাট পৌর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি আবারো এই অসাধু চক্রটি লাইসেন্স পেতে দৌরঝাপ শুরু করে দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবী, এসব স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কবল থেকে গোস্ত বাজার রক্ষা করতে হলে লাইসেন্স নবায়নে পৌর প্রশাসনকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে যাচাই-বাছাই করে লাইসেন্স দিতে হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ রবিন বলেন, আমরা গোস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে বসেছি। কিছু শর্ত ও নিয়মাবলী বেধে দেয়াসহ যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স দেয়া হবে।