চট্টগ্রামের ন্যাশনাল হসপিটাল চট্টগ্রাম লিমিটেডে ঘটেছে এক ব্যতিক্রমী ও বিরল ঘটনা-এক নারী একসঙ্গে জন্ম দিয়েছেন ছয়টি সন্তান। শনিবার দুপুরে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে জন্ম নেয় পাঁচ কন্যা ও এক পুত্র সন্তান। হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন সুলতানা লুলুর তত্ত্বাবধানে সফলভাবে সম্পন্ন হয় এই জটিল ডেলিভারি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের এই মা দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। গর্ভাবস্থার ১৯তম সপ্তাহ থেকে তাকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। চিকিৎসকদের দক্ষতা, প্রস্তুতি ও অভিজ্ঞতার কারণে সাধারণত সিজারিয়ান পদ্ধতিতে হওয়া এমন একটি জটিল ডেলিভারি সফলভাবে স্বাভাবিকভাবেই সম্পন্ন হয়।

নিউনেটাল ইউনিট জানিয়েছে, নবজাতকদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকিরা কম ওজনে জন্ম নিয়েছে, তবে বর্তমানে সবাই ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে এবং নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।

গাইনি বিভাগের আরেক চিকিৎসক ডা. কারিশমা সুলতানা কে বলেন, “গত পাঁচ বছরে দুই থেকে তিনটি যমজ সন্তানের জন্ম আমরা নিয়মিত দেখেছি। কিন্তু একসঙ্গে ছয় সন্তান এবং তা আবার স্বাভাবিক ডেলিভারিতে এটি আমাদের হাসপাতালের ইতিহাসে প্রথম।”

তিনি আরও জানান, “এই মা আগেও সন্তান জন্ম দিয়েছেন। একবার তার গর্ভে চারটি ভ্রুণ ছিল, কিন্তু তা পাঁচ মাসের মাথায় নষ্ট হয়ে যায়। সেই সময় তিনি বেশ শারীরিক জটিলতায় ভুগেছিলেন। এরপর আবার একটি সন্তানের জন্ম হয়। এবার গর্ভধারণের পর আল্ট্রাসাউন্ডে পাঁচটি ভ্রুণের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। কিন্তু ডেলিভারির সময় দেখা যায়, ছয়টি শিশু জন্ম নিয়েছে।”

এ বিষয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রশ্ন করলে চিকিৎসক বলেন, “একসঙ্গে এতগুলো শিশু জন্মানো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে, এমনকি মৃত্যুঝুঁকিও থাকে। তাই আমরা পূর্ব থেকেই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম রক্তদাতা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরঞ্জাম সব কিছুই হাতে রাখা ছিল।”

বর্তমানে মা ও ছয় নবজাতক সুস্থ আছেন এবং পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এই ঘটনা চট্টগ্রামের চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।