শ্বশুর বাড়ি যাওয়া হলো না জাবি শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসু নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকালের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদাউস মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ চত্বরে প্রথম জানাযা শেষে গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলা সদর শহরে রাতে কফিনের গাড়ি পৌঁছালে এলাকায় শোকে জনসাধারণ স্তব্ধ হয়ে যায়। পারিবারিক সদস্য ও প্রতিবেশীদের কান্নার রোল পড়ে যায়। কফিন আসার সময় পাবনা শহরের সাংবাদিকেরা তার বাড়িতে এসে সমবেত হয় । স্থানীয় প্রতিবেশীরা তাকে শেষবারের মতো দেখার জন্য ভিড় জমাতে থাকে। বাদ এশা জেলা কাচারি জামে মসজিদে তার দ্বিতীয় নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয় । এ সময় তার বাবা পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি দৈনিক ইত্তেফাকের পাবনা প্রতিনিধি রুমি খন্দকার ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীর ডাক্তার শফিকুর রহমানের প্রতিনিধি পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী প্রিন্সিপাল ইকবাল হোসেন বক্তব্য রাখেন। পরে পাবনা পৌরসভা সদর আরিফপুর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পারিবারিকভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার, পরিবারের আশা ছিল একমাত্র মেয়েকে জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে শ্বশুরবাড়িতে পাঠান। কিন্তু তা আর হলো না। যে বাড়িতে বিয়ের ধুমধাম অনুষ্ঠান করার কথা সেই পাবনার বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা পাবনার বিশিষ্ট সাংবাদিক পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক ইত্তেফাকের পাবনা প্রতিনিধি ও অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক রুমি খন্দকার এবং পাবনা কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক লুৎফুন্নাহার পলির একমাত্র সন্তান। ১৯৯৫ সালে জন্ম জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা ছোট থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০০৯ সালে পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং পাবনা মহিলা কলেজ থেকে ২০১১ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ নিয়ে পাস করার পর ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেই অনার্স ও মাস্টার্স শেষে ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন।

বাবা রুমি খন্দকার জানান, নির্বাচনের দায়িত্ব শেষে রাত ১২টার দিকে শিক্ষক কোয়ার্টারে তার বাসায় গিয়েছিল। পরে সকালে যখন তাকে নির্বাচনের ভোট গণনার কক্ষে ডাকা হয়েছিল, তখন সেখানে যায়। কিন্তু কক্ষে ঢুকার আগেই দরজার সামনেই সে পড়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়। গতকাল ভোটগ্রহণের পর আমার সঙ্গে ওর কথা হয়। ও নির্বাচন নিয়ে বেশ খুশি ছিল।