খেলাফত মজলিস যশোর শাখার কার্যালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার( ১৮ ডিসেম্বর)বিকেলে খেলাফত মজলিসের আমির হাফেজ আব্দুল্লাহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে যশোরের বিভিন্ন ইসলামী ও দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলসমূহ অংশগ্রহণ করে। মোট আট দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ ও সাংগঠনিক প্রস্তুতি জোরদারের ব্যাপারে বিশদ আলোচনা করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আবু জাফর সিদ্দিকী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য নিজামুদ্দিন অমিত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যশোর জেলা সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির যশোর সেক্রেটারি গাজী মুকিত, যশোর জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন বিশ্বাসসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দলের যশোরের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তারা উল্লেখ করেন যে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, আস্থা, একতা ও সমন্বয়ই সুষ্ঠু নির্বাচনের ভিত্তি স্থাপন করতে পারে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাংগঠনিক প্রস্তুতি, সমন্বয় ও প্রচার কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।

এছাড়া বৈঠকে ওসমান হাদীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানানো হয়। বক্তারা বলেন, ওসমান হাদী ছিলেন একজন সাহসী, দেশপ্রেমিক ও ন্যায়বিচারের সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। তার মৃত্যু শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনের ক্ষতি নয়, বরং জাতীয় স্বার্থ ও মানবাধিকারের প্রশ্নে বলিষ্ঠ উচ্চারণকারীর বিদায়।

বৈঠকে বক্তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, অর্থনীতি ও কূটনীতিতে যে কোনো বহিঃশক্তির অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। তারা জোর দিয়ে বলেন যে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।

বক্তারা ওসমান হাদীর মৃত্যুতে দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা বলেন, একটি স্বাধীন দেশে রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিরপেক্ষ তদন্ত, সত্য উদঘাটন এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

বৈঠকের সমাপ্তিতে আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতা আরও সুসংহত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়। একই সঙ্গে দেশ ও জাতির সামগ্রিক কল্যাণে শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই ভবিষ্যতে ন্যায়ভিত্তিক, উন্নত ও স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।