সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও তার স্ত্রী সেলিনা মোমেনের অন্যতম সহযোগী বহুল আলোচিত ভূমি জালিয়াত মিসবাউল ইসলাম কয়েসকে গ্রেফতার করেছে সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশ। শনিবার মধ্য রাতে শহরের জল্লারপাড় রোড’ জিন্দাবাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কয়েসের বিরুদ্ধে হত্যা, প্রতারণা, ভূমি জালিয়াতিসহ আটটি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল হক। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মন্ত্রী মোমেনের নাম ব্যবহার করে সিলেটে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কয়েসের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে। জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ভূমিদস্যু হেলেন আহমদ ছিলেন দুর্দান্ত প্রতাপশালী। সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের স্ত্রী সেলিনা মোমেনের অত্যন্ত ঘনিষ্টজন ছিলেন হেলেন আহমদ। আর হেলেন আহমদের ব্যক্তিগত চাকর থেকে একসময় ব্যবসায়িক পার্টনার হওয়া ভূমিদস্যু মিসবাউল ইসলাম কয়েসও সেই দাপটকে কাজে লাগান। আওয়ামী আমলে রাতারাতি কয়েক শ’ কোটি টাকার মালিক বনে যান হেলেন-মিসবাহ। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

মিসবাউল ইসলামের এক সময় নুন আনতে পানতা ফুরানোর মতো অবস্থা থাকলেও এখন তার রয়েছে একাধিক বাড়ি-গাড়ি। তার বিরুদ্ধে ঢাকাতে ধর্ষণ মামালা রয়েছে। অবশ্য ক্ষমতার দাপটে ওই সময় মিসবাউল ইসলামকে কিছু করার ক্ষমতা ছিল না। হেলেন আহমদের দাপটের কাছে প্রশাসন জিম্মি থাকায় সুযোগ বোঝে দুজনেই প্রবাসীদের ভূমি দখল করে যাচ্ছিলেন। সিলেটে প্রেসক্লাবে হেলেন-মিসবাহ প্রতারণার শিকার হওয়া প্রবাসীরা সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। তবুও দমানো যায়নি এই দুষ্টচক্রকে।

এদিকে, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর রাতারাতি রূপ পাল্টে ফেলেন ভূমি প্রতারক। তিনি ২০২৫-২৬ সেশনের জন্য নির্বাচিত হওয়া সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াত আমীরের ছবি পোস্ট করে শুভ কামনা জানান। নানাভাবে সে নিজেকে জামায়াতের লোক প্রমাণ করার পাঁয়তারা চালায়। জামায়াতের নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করায় তার নতুন রাজনৈতিক খায়েস মুখ থুবড়ে পড়ে। এর আগে তিনি নিয়মিত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সকল অনুষ্ঠানের ছবি সংগ্রহ করে ফেসবুকে পোস্ট করতেন। সম্প্রতি প্রতারক মিসবাউল ইসলাম জেলা ও মহানগর বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থাকা অনেকের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছিলেন। তবে জামায়াতে ইসলামী বা বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে তিনি কখনো পাত্তা পাননি।