মতলব উত্তর (চাঁদপুর) সংবাদদাতা : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পূর্ব ফতেপুর ইউনিয়নের ঠেটালিয়া কাঁঠালবাগান সংলগ্ন পূর্ব ফতেপুর মৌজায় সরকারি রাস্তা পুনর্নির্মাণের কাজে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি পক্ষের বাধায় দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। রাস্তার মাঝখানে পিলারের বেড়া ও সুপারি গাছ লাগিয়ে উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে রাখায় চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
সরেজমিনে জানা যায়, ফতেপুর মৌজার সিএস ৩৬ দাগের হাল বিএস ১০১৮ দাগের জমির রাস্তার পশ্চিম পাশে আমেরিকা প্রবাসী আবুল কালাম আজাদের বাড়ির সীমানার গাছ কাটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার সালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়ে উভয় পক্ষই রাস্তা নির্মাণে সম্মত হন এবং কাজও শুরু হয়। কিন্তু হঠাৎ করে রাস্তা পাকা করার আগেই মৃত কাদের মুন্সীর ছেলে নেছার মুন্সী, মেজবা মুন্সী ও তাদের আত্মীয়-স্বজন রাস্তার মাঝখানে বেড়া দিয়ে সুপারি গাছ রোপণ করে কাজ বন্ধ করে দেন।
আবুল কালাম আজাদ প্রবাসে থাকায় তার স্ত্রী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, ওনারা খুব উগ্র স্বভাবের। সামান্য কারণেই আমাদের বাড়ির লোকজনদের মারধর করতে আসে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। রাস্তা করতে হলে আমাদের গাছগাছালি কেটে সীমানা দিয়ে রাস্তা দিতে হবে বলে চাপ দিচ্ছে। না দিলে যেকোনো সময় হামলা বা ও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এ ঘটনায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে মতলব উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন প্রবাসী আবুল কালামের স্ত্রী মোসা: বুলু আক্তার (৪৫)। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় ৭ বছর আগে স্থানীয় সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে উভয় পক্ষ ৮ ফুট করে জমি দিয়ে ১৬ ফুট চওড়া রাস্তা তৈরিতে সম্মত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বিবাদীরা ২ ফুট রাস্তা দখল করে গাছ লাগায়। সম্প্রতি সরকারি টেন্ডার অনুযায়ী ১৪ ফুট রাস্তা পাকা করতে গেলে তারা বাধা দেয় এবং আরও ২ ফুট জায়গা দাবি করে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিবাদীরা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে তাদের দাবিকৃত জায়গা না দিলে জোরপূর্বক গাছ কেটে রাস্তা নেবে, প্রতিবাদ করলে খুন করে লাশ গুম করবে। এই ঘটনায় স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীও রয়েছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, সরকারি রাস্তা নির্মাণ একটি জনস্বার্থের কাজ। তাই দ্রুত প্রশাসনের উদ্যোগে বাধা অপসারণ করে কাজ শেষ করা জরুরি, নইলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি আরও বেড়ে যাবে।
রাস্তার কাজের ঠিকাদার রিপন পাটোয়ারী বলেন, এই রাস্তাটির টেন্ডার হয়েছিল ২০২০ সালে। মামলা থাকায় এতদিন কাজ শুরু করতে পারিনি। এখন কাজ শুরু করলে তারা জোরপূর্বক বেড়া দিয়ে সুপারি গাছ লাগিয়ে দিয়েছে। এতে আমার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, তবুও এলাকার স্বার্থে কাজ করার চেষ্টা চালাচ্ছি।
এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার আলম হোসেন জানান, বর্তমানে কী কারণে কাজ বন্ধ আছে তা সঠিকভাবে জানি না। তবে এলাকাবাসী চান প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ করুক।