নীলফামারী সংবাদদাতা : নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে তিস্তা সেচ প্রকল্পের প্রধান ক্যানেলের উভয় বাঁধ পুনর্বাসন ও শক্তিশালীকরণ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মের তোয়াক্কা না করে এস্কেভেটর দিয়ে ক্যানেলের দুই বাঁধের নিচে গর্ত করে সেই মাটি ও বালি দিয়ে বাঁধের ওপর ভরাট করছে ঠিকাগারি প্রতিষ্ঠানটি। এতে বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। এছাড়া বাঁধের মাটি কম্প্যাকশন না করে স্লোপে যেন তেন করে ঘাসের চাপা লাগিয়েছে। নীলফামারী পাউবো’র যোগসাজশে ঠিকাদার এমনটি করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সরেজমিন দেখা যায়, জেলার জলঢাকা উপজেলার দুন্ধিবাড়ি থেকে কিশোরগঞ্জের চেংমারী সুইচগেট পর্যন্ত ওই সেচ ক্যানেলের প্রায় ১৬ কিমি উভয় বাঁধ সংস্কারের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। পটুয়াখালির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিজানুর আলম (জেভি) ৭ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে কাজটি পায়। বাইরে থেকে মাটি এনে বাঁধ পুনর্বাসন ও শক্তিশালীকরণে মাটি ভরাটের নিয়ম উপেক্ষা করে ক্যানেল সংলগ্ন অ্যাকোয়ারভুক্ত জমির মাটি কেটে নেয়।
এছাড়া এস্কেভেটর দিয়ে ক্যানেলের ভিতরে দুই বাঁধের নিচে গর্ত করে সেই মাটি ও বালি তুলে বাঁধে দেয়। এতে কিশোরগঞ্জ উপজেলার চেংমারী সুইচগেট এলাকার ক্যানেলের দুই বাঁধে, জুড়াবান্ধা সুইচগেট এলাকার পূর্ব বাঁধে, বড়ভিটা মধ্যপাড়া ও জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে উভয় বাঁধের টপ ও স্লোপে নিয়মানুয়ায়ী মাটি ভরাট না করে যেন তেনভাবে মাটি ও বালি দিয়েছে। সেই মাটি কম্প্যাকশন না করে মাঝে মধ্যে বাঁধের স্লোপে ৩-৪ ফিট পর ঘাসের চাপা লাগিয়েছে। এতে বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন স্থানে বাঁধের স্লোপ ভেঙ্গে মাটি গড়িয়ে পড়ছে। ওই ক্যানেল সংলগ্ন সিট রাজিব গ্রামের নাজু, উত্তর বড়ভিটা মধ্যপাড়া গ্রামের সাইফুল, বগুলাগাড়ী বাবুপাড়া গ্রামের গোপাল ও সেচ ক্যানেল পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি লেলিন জানান, পাউবো’র কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদার নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। বাইরে থেকে মাটি না এনে অ্যাকোয়ারভুক্ত জমির মাটি ও ক্যানেলের বাঁধ সংলগ্ন ভিতরের মাটি স্কেভেটর দিয়ে কেটেছে। বাঁধের নিচে গর্ত করে সেই মাটি বাঁধের ওপরে দেওয়ায় বাঁধ ধসে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। সীমাহীন অনিয়মের মাধ্যমে পাউবো ও ঠিকাদার বরাদ্দের টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার খাদেমুল ইসলামের সঙ্গে টেলিফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায় নি।
এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে ক্যানেলের বাঁধ সংলগ্ন নিচের মাটি কেটে ওপরে দেওয়ার অনিয়মের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি আগে জানিয়েছিলেন, সাব-ঠিকাদারের নম্বর দিচ্ছি কথা বলেন দেখি। আমি ব্যস্ত আছি পরে কথা বলতেছি। এ ব্যাপারে নীলফামারী (পাউবো) পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানান, ক্যানেলের বাঁধ সংলগ্ন একোয়ারভুক্ত জমি ও ক্যানেলের ভিতরের মাটি স্কেভেটর দিয়ে কেটে বাঁধে দেওয়ার কোন নিয়ম নাই। যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে ট্রাক্সফোর্সের রিপার্টে সেই পরিমান মাটি বাদ যাবে। বাঁধের স্লোপে নিরবছিন্নভাবে ঘাসের চাপা না লাগানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এর বেশী তিনি বলতে রাজী নন।