স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সধারী পরিবেশকরা নিয়মিতভাবে গ্যাস সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি একজন পরিবেশকই ৮০টি প্রতিষ্ঠানের পরিবেশক হিসেবে কাজ করছেন। এই অনিয়ম খুঁজে বের করতে কোম্পানিটি ইতিমধ্যে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, আর এবার মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার বিমানবন্দর সড়কের গুপ্তখাল সড়কে এসএওসিএল প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক সাইয়েদ আলমের নেতৃত্বে একটি দল। অভিযান শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানান, এসএওসিএল, পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনা-এই চারটি কোম্পানি মূলত এলপি গ্যাস সরবরাহ করে। তবে বিতরণ প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে।
জানা গেছে, এসএওসিএল থেকে গ্যাস নিয়ে ব্যবসা করা ৩৩৬টি পরিবেশকের মধ্যে প্রায় ৫৭টির লাইসেন্সের মেয়াদ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মেসার্স ডি ভি গ্যাসের লাইসেন্স ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর এবং মেসার্স সাগরিকা এজেন্সির লাইসেন্স ২০২৩ সালের মার্চে শেষ হয়, কিন্তু তারা এখনও গ্যাস সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছে।
দুদক কর্মকর্তা সাইয়েদ আলম বলেন, “প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স নিয়ে এসব ডিলাররা গ্যাস পাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। একজন ব্যক্তি কীভাবে একসঙ্গে ৮০টি প্রতিষ্ঠানের অথরাইজড পার্সন হতে পারে, তা নিয়েও আমরা প্রশ্ন তুলেছি।” তিনি আরও বলেন, “এসএওসিএলের ডিলারশিপ নীতিমালাও আমাদের দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ, সেটিও আমরা খতিয়ে দেখবো। মূলত এই শিথিল ব্যবস্থাপনাই বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে, যার ফলে সাধারণ মানুষকে বেশি দামে গ্যাস কিনতে হচ্ছে।”
তিনি অভিযোগের বিষয়ে বলেন, “পুরোনো সিইও, এমডি এবং বিশেষ করে সাবেক সহকারী ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) আবদুল সালাম মীরের দায়িত্বে গাফিলতির কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একটি সিন্ডিকেটও সক্রিয় রয়েছে এখানে।”
বর্তমান ব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি বলেন, “নতুন সিইও দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন, কমিটি গঠন করেছেন এবং ডিলারদের চিঠি পাঠাচ্ছেন। তবে যাদের কাছে পুরোনো রেকর্ড রয়েছে, তারা সহযোগিতা করছেন না।” দুদক এ বিষয়ে রেকর্ড যাচাই করে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করবে বলে জানান সাইয়েদ আলম।