মোঃ ফিরোজ আহমেদ,পাইকগাছা, খুলনা: এবছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে খুলনার পাইকগাছায় পাটচাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পচে যাচ্ছে পাটক্ষেত, কমছে ফলন। এতে করে সোনালি আঁশের স্বপ্ন দেখছিল যে কৃষকরা, তাদের সেই স্বপ্ন এখন পানিতে ভাসছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পাইকগাছায় ৩৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। উপজেলার গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি, রাড়ুলী ও পৌরসভার কয়েকটি জমিতে পাট চাষ করা হয়। শুরুতে বৃষ্টির অভাবে পাট ভালোই বেড়ে উঠছিল। কিন্তু পরবর্তীতে টানা অতিবৃষ্টির কারণে অধিকাংশ পাটক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়।

কৃষকদের দুর্দশা

স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির কারণে পাটগাছের গোড়া পচে যাচ্ছে এবং গাছগুলো তেমন বড় হতে পারেনি। আরেক কৃষক সামাদ মিয়া বলেন, “বিঘা প্রতি দুই মণ পাটও হবে না। পাট ছোট হওয়ায় আঁশের মানও খুব খারাপ হয়েছে।”

এই দুর্যোগের মধ্যে কৃষকদের আরও একটি বড় চিন্তা হলো শ্রমিক সংকট। বেশি মজুরি দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। তাছাড়া, পাট কাটা, ধোয়া ও শুকানোর খরচও বেড়েছে। বাজারে নতুন পাট প্রতি মণ প্রায় ৩০০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও, উৎপাদন খরচ না ওঠায় কৃষকরা ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে হতাশায় ভুগছেন।

কৃষি বিভাগের প্রতিক্রিয়া

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন বলেন, কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সার ও বীজ প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পাটের ফলন ভালো হয়নি। তিনি বলেন, “পাট বড় হতে না পারায় আঁশের মান খারাপ হয়েছে, যার ফলে কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাচ্ছে না। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

এই অবস্থায়, অনেক কৃষকই এখন তাদের সোনালি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারছেন না। পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও শুকানোর কষ্টসাধ্য কাজ শেষে বাজারে ভালো দাম না পেলে, তাদের ক্ষতি আরও বাড়বে।