ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলীতে আহত হয়ে নাসির উদ্দিন (৪০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দেড়টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে (শনিবার) রাতে মহেশপুর সীমান্তের শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় নাসির উদ্দিনসহ কয়েকজন বাংলাদেশী সীমান্ত পার হয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। সেসময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলী ছোড়ে। এতে নাসির উদ্দিন গুরুতর আহত হন। স্বজনরা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে গোপনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ দিন পর তার মৃত্যু হয়। সূত্র জানায়, নাসিরের সঙ্গে থাকা অপর দুজন পদ্মপুকুর গ্রামের বর্ডার রিপন ও অনন্তপুর গ্রামের সোহাগও ওই সময় গুলীতে আহত হন। তবে তারা গোপনে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। শ্যামকুড় ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, নাসিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ গুলীবিদ্ধ হওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলেননি। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি আড়াল করে রাখা হচ্ছে। নিহতের প্রতিবেশী ও শ্যামকুড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহানুর রহমান বলেন, ‘ভাতিজা মারা গেছে ঠিক আছে, কিন্তু কিভাবে মারা গেছে সেটা আমাদের স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি।’ স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সদস্য ফেরদৌস খান জানান, মৃত্যুর খবর শুনে তিনি বাড়িতে যান। তবে নাসির বিএসএফের গুলীতে মারা গেছেন এমন কথা পরিবারের কেউ স্বীকার করছেন না। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমি সাংবাদিকদের কাছ থেকে শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। মহেশপুর ৫৮ বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমরা ঘটনাস্থলে বিজিবি সদস্য পাঠিয়েছি। তবে পরিবারের কেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি বা গুলীর বিষয়টি স্বীকার করেনি।’ গত এপ্রিল মাসে একই সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলীতে আরো দুই বাংলাদেশি নিহত হন। ১১ এপ্রিল বাঘাডাঙ্গা গ্রামের ওয়াসিম ও ২৭ এপ্রিল গোপালপুর গ্রামের ওবাইদুর রহমান গুলীবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। দেড় মাস পার হলেও তাদের লাশ এখনো দেশে ফেরত আসেনি। বিজিবি সূত্রে জানা যায়, ওই দুজনের লাশ বিএসএফ ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে, ফলে কূটনৈতিক জটিলতার কারণে লাশ ফেরতের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।