চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের খতিব ও ইসলামীক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গভর্নরস, আওলাদে রাসূল (স:) আল্লামা সাইয়েদ আনোয়ার হোসাইন তাহের আল জাবেরী আল-মাদানী বলেছেন, ইহুদিবাদীরা এখন পর্যন্ত পঞ্চাশ হাজারেরও অধিক ফিলিস্তিনী নাগরিককে হত্যা করেছে। এখনো তারা বর্বরতা চালাচ্ছে। ইহুদিরা মনে করে ফিলিস্তিনের মুসলমানরা নিরীহ, তারা নিরীহ নয়, তাদের পাশে রয়েছে বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমান। তিনি বলেন, ইহুদিদের সকল পণ্য বর্জন করুন। আমরা হিন্দুস্তানের কোনো পণ্য গ্রহণ করবো না। তাদের সব পণ্য আমাদের বর্জন করতে হবে। ফিলিস্তিনের পূণ্যভূমির প্রতিটি ইঞ্চির মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের ধর্মীয় ও মানবিক দায়িত্ব। শনিবার আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে চট্টগ্রামে সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদের মার্চ ফর প্যালেস্টাইন এর মিছিল পূর্বক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা কোনো দলাদলির পক্ষে না। মুসলমানদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য সকলে একদল। আজ ফিলিস্তিনের শিশুরা এতিম হয়ে গেছে। তারা ঘাস খেয়ে বেঁচে আছে। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমানরা আজ পৃথিবীর ২০০ কোটি মুসলমানের দিকে চেয়ে আছে। তারা আমাদের ডাকছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের হাতে সামর্থ্য না থাকলেও মুখে প্রতিবাদ করতে পারি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেটাও অনেক মুসলমান তা করছে না। ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য বাংলাদেশী মুসলমানদের ফিলিস্তিনে যাওয়ার সুযোগ (ভিসা) করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। আমরা ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমরা কাউকে অন্যায় করতে দেবো না। আর অন্যায় প্রতিরোধ করতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক আহমদ। সভাপতিত্ব করেন, সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ড. অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়্যেদ মোহাম্মদ আবু নোমান। ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সদস্য মাওলানা মোহসিন আল হোসাইনীর সঞ্চালনায় সমাবেশে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মমতাজুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম বায়তুশ শরফের রাহবার আবদুল হাই নদভী, ড. এ বি এম মফিজুর রহমান আজহারী, অধ্যক্ষ মাওলানা আ ছ ম সলিমুল্লাহ, মাওলানা আহমদুর রহমান নদভী, মাওলানা আবু হানিফা মুহাম্মদ নোমান, মাওলানা মামুনুর রশীদ নুরী, মাওলানা মুনিরুল ইসলাম রফিক, মাওলানা মিয়া মোহাম্মদ হোসাইন শরীফ, সমিলা সিরাজ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাওলানা হামেদ হাছান, মাওলানা সলিমুল্লাহ হাবিবী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ড.ফয়জুল হক। সমাবেশ শেষে এক প্রতিবাদ মিছিল আন্দরকিল্লা থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ উত্তর গেইটে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে সভাপতির বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ড. অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়্যেদ মোহাম্মদ আবু নোমান। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ইসলামের প্রবেশদ্বার। অতীতের যেকোনো আন্দোলনে চট্টগ্রামবাসী সবসময় সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। আজও ইসরাইলী বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে মানুষ এখানে সমবেত হয়েছে। তিনি বলেন, একদিন এমন সময় আসবে, পৃথিবীর মানচিত্রে ইহুদিবাদীদের কোনো চিহ্ন থাকবে না। তারা পালানোর সুযোগও পাবে না। চট্টগ্রামের মুসলমানরা সাহসিকতার সঙ্গে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সমাবেশের শুরুতে কুরআন তেলওয়াত করেন হিজবুল্লাহ আল মুজাহিদ। সমাবেশে ইসলামী সংগীত পরিবেশ করেন, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির শিল্পীবৃন্দ। সমাবেশ শেষে আওলাদে রাসুল (সা.) আল্লামা সাইয়েদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরী আল-মাদানী মুনাজাতের মাধ্যমে মিছিল ও সমাবেশ শেষ হয়।