ভূমিকম্প আতঙ্ক পেয়ে বসেছে আমাদের। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিজেদের বাঁচাতে কি করতে হবে এ নিয়ে চিন্তিত সবাই। বাংলাদেশে আমরা যারা থাকি তাদের খুব কম সংখ্যক লোকেরই ভূমিকম্প বিষয়ক বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে। এতদিন ভূমিকম্প নিয়ে এদেশের মানুষ খুব একটা ভাবেনি। তাদের ধারণা ছিল এশিয়ার জাপান, চীন অথবা ইউরোপ, আমেরিকার কিছু দেশে হয়তো ভূমিকম্প হয়, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত হয়। নেপাল, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, ভারতের পর বাংলাদেশেও সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ভূ-কম্পন নতুন করে চিন্তা ভাবনার খোরাক যুগিয়েছে। আগামীতে ভূমিকম্প হতে রক্ষা পেতে আমাদের কি করতে হবে, কিভাবে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে সে বিষয়ে দেশবাসীকে সচেতন করতে "ওয়ার্ল্ড ওয়াচ সোসাইটি" এর পক্ষ থেকে গত রোববার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া (ভিআইপি লাউঞ্জ) মিলনায়তনে
"ভূমিকম্প : সচেতনতা ও আমাদের করনীয়" শীর্ষক এক আলোচনার আয়োজন করে। "ওয়ার্ল্ড ওয়াচ সোসাইটি" এর চেয়ারম্যান এডভোকেট লুৎফর রহমান এর সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভূমিকম্প সচেতনতা বিষয়ক একটি কি নোট পেপার উপস্থাপনা করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মেজর (অব.) এ কে এম শাকিল নেওয়াজ। এ সময় আলোচনায় অংশ নেন ভূ তত্ত্ব ও ভূমিকম্প প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী, দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু সহনশীলতা ও টেকসই উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ইউএনডিপি'র প্রফেসর ড. মাহমুদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ইএনসি মেজর জেনারেল (অব.) মেজর জেনারেল ইবনে ফজল শায়েকুজ্জামান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রি. জেনারেল (অব.) আলী আহমেদ খান, ওয়ার্ল্ড ওয়াচ সোসাইটির পরিচালক ও ক্রীড়া সাংবাদিক কাজী ইমরুল কবীর সুমন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা মেইন্টেনেন্স পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ আজাদ আনোয়ার পিএসসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স উপ-পরিচালক মামুন উর রশিদ, ঢাকা সিটি করপোরেশন এর চীফ আরবান অফিসার মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) এর প্রতিনিধি ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ বুলবুল, ভূতত্ববিদ তাহমিনা আক্তার, মানবাধিকার সংগঠক ফরিদ খান, লায়ন আক্তারুজ্জমান প্রমুখ।
ভূতত্ত্ববিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাহমিনা আক্তার বলেন, 'আমরা বাংলাদেশীরা আসলেই ভূমিকম্প বিষয় সচেতন নই। এর মেইন কারণ আমরা নিজেরাই জানিনা কি রকম মাটির উপর আমরা বসে আছি। আমাদের নিচের মাটির উপরের সেগমেন্টগুলো খুবই সফট, নরম। এগুলো ভূমিকম্প সহনশীল নয়। আমাদের উত্তরে হিমালয় এবং পূর্বে আরাকান ফোল্ডেড বেল্ট। আমাদের ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে ন্যাচারাল এবং প্রাকৃতিক। আমরা মানুষের তৈরি ন্যাচারাল সমস্যাগুলো সলভ করতে পারি। ভূমিকম্প প্রাকৃতিক কারণেই হবে। ঢাকা ঘনবসতিপূর্ণ। আমরা বাঙালিরা নিয়ম কানুন মানতে চাই না। সময় এসেছে সতর্ক হওয়ার, নিয়ম মানার।'