দিন রাত ব্যস্ততা,কেউ মাপ নিচ্ছেন,কেউ কাটছেন,কেউ সেলাই করছেন, এভাবে দিন থেকে রাত পর্যন্ত প্রচন্ড ব্যস্ততা। দম ফেলবার ফুসরত নেই তাদের।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ফটিকছড়িতে দর্জি দোকান বা টেইলার্সে এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সঠিক সময়ে গ্রাহকদের কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন দর্জি কারিগররা। যেন দম ফেলবার ফুরসত নেই তাদের।
যতই ঈদ ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা বাড়ছে দর্জি পল্লীতে। দিন রাত সেলাই মেশিনের শব্দ আসছে।
ঈদে ধনী গরিব ছোট বড় নারী পুরুষ সকলে নতুন জামা কাপড় পরিধান করে। কেউ পছন্দ করেন রেডিমেইড, আবার অনেকে নিজ পছন্দ অনুযায়ী দর্জির দোকানে সেলাই করা পোষাক পরিধানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তবে রেডিমেইড পোষাক অনেক সময় শরীরের সাথে পুরোপুরি মানানসই হয় না বিধায় দর্জি দোকানে সেলাই করা পোষাকের প্রতি আগ্রহ থাকে বেশি। এ ক্ষেত্রে তরুন তরুনীদের আগ্রহই এগিয়ে। তারা তাদের পছন্দের কাপড় ও নিজ পছন্দের ডিজাইনে তৈরি কারা পোষাকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
সরেজমিনে উপজেলার নাজিরহাট, বিবিরহাট, নানুপুর, আজাদীবাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে দেখা যায় এখানকার দর্জির দোকানে ভিড় জমিয়েছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। কেউ অর্ডার দেওয়া পোষাক ছাড়িয়ে নিচ্ছেন, কেউ অর্ডার দিচ্ছেন। তবে ইতোমধ্যে অনেক দর্জি দোকান অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কারণ সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারবেনা বলে। এক কথায় দর্জি পাড়া ও দোকানগুলো ভীষন ব্যস্ততার মধ্যে সময় পার করছে। নাওয়া খাওয়া কথা বার্তারও যেন সময় নেই। শুধুমাত্র গ্রাহকদের সময় মত অর্ডার সাপ্লাই দেওয়ার জন্য যত ব্যস্ততা। দোকান পরিচালক অর্ডার সাপ্লাই দিচ্ছেন এবং নিচ্ছেন। চমক টেইলার্সের পরিচালক সঞ্জয় বলেন, সারা বছরের চেয়ে ঈদ মৌসুমে আমরা পোষাক সেলাইয়ে অর্ডার বেশি পাই, যার ফলে আমাদের ব্যস্ততাও বাড়ে। আমদের এখন মাত্র একটি লক্ষ্য সময়মতো গ্রাহকদের অর্ডার সাপ্লাই দেওয়া।
মুন স্টার টেইলার্সের পরিচালক মোহাম্মদ ইউছুপ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে গড়পাত্তা অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি কারণ সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারবোনা বলে। এছাড়া চাহিদার চেয়ে বেশি অর্ডার নিলে তাড়াহুড়ায় কাজ সুন্দর হয়না বিধায় আমরা অর্ডার নেচ্ছি দেখেশুনে।
নারী দর্জি সাবানা বলেন, রাত দিন কাজ করতে হচ্ছে। তরুনীদের অর্ডার বেশি পাচ্ছি। তারা তাদের পছন্দের কাপড় ও ডিজাইনে সেলাই অর্ডার দিচ্ছে। এছাড়া অনেকে রেডিমেইড ক্রয় করে আমাদের কাছে ফিটিং করার জন্য নিয়ে আসছে।
সেলাই পোষাক পছন্দকারী তরুন নাজমুল,আসিফ বলেন, সেলাই করা পোষাক পরিধান করতে পছন্দ করি। গায়ে ফিটিং হয়, টেকসই হয়। রেডিমেইড পোষাকে নানা ঝামেলা। তবে তারা অভিযোগ করে বলেন দর্জি দোকানিরা ঈদের অজুহাতে দাম বেশি নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে কয়েকজন দর্জি দোকানি বলেন আসলে এ সময় কারিগরদের অতিরিক্ত বেতন দিতে হয় এছাড়া আরো বিভিন্ন অতিরিক্ত খরচ হয়। তার জন্য সেলাই খরচ আমাদের কিছুটা বেশি নিতে হয়। তবে এক্ষেত্রে আমরা নিয়মিত গ্রাহদের কিছুটা ছাড়ের ব্যবস্থা রেখেছি।