মোংলায় সুন্দরবন থেকে অবৈধভাবে শিকার করা কাঁকড়ার নৌকা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের সময় ৩ চাঁদাবাজের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মিলন মল্লিক নামে একজনকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও, পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। একইভাবে নিষিদ্ধ সময়ে ধরা কাঁকড়াসহ নৌকাগুলোও মুক্তি দেওয়ায় জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার (১১ আগস্ট) রাত ১টার দিকে, উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাঁশতলা বাজার সংলগ্ন খালে। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের আন্ধারমানিক এলাকা থেকে অবৈধভাবে আহরিত প্রায় ২০টি কাঁকড়ার নৌকা খালে এসে ভিড়ে।
এ সময় তিন চাঁদাবাজ নৌকাগুলোতে উঠে জেলেদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রথমে এক হাজার টাকা, পরে তা বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা দাবি করে।
দাবিকৃত অর্থ দেওয়ার পরও তারা অসন্তুষ্ট হয়ে পরিস্থিতি উত্তেজিত করে তোলে। একপর্যায়ে জেলেরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মারধর করে এবং ডাকাত বলে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। স্থানীয়রা মিলন মল্লিককে আটক করে পুলিশে দেয়, তবে অপর দুই চাঁদাবাজ পালিয়ে যায়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মানবিক কারণে কাঁকড়াসহ জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা চলছে। স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, বনবিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা নৌকা প্রতি সাত হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে নিষিদ্ধ সময়েও কাঁকড়া আহরণের সুযোগ দিচ্ছেন। পাশাপাশি পথে পথে বিভিন্ন মহলকেও ঘুষ দিতে হয় বলে তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক টহল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিক চৌধুরী ফোন রিসিভ করেননি। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, “এ ধরনের ঘটনা হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে তদন্ত করে দেখা হবে। অনেক সময় জেলেরা ধরা পড়লে নিজেদের রক্ষার জন্য দাবি করে যে তারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে—এটিও বর্তমানে একটি কমন প্র্যাকটিস হয়ে দাঁড়িয়েছে।”