সুন্দরবন উপকূলবর্তী খুলনা জেলার কয়রা উপজেলায় অবস্থিত এস ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার নূন্যতম পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। এই বিদ্যালয়টি শুরু থেকেই স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নানা কৃতিত্বের সাক্ষর রেখে আসছে। বিদ্যালয় থেকে এ পর্যন্ত ১২৯ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি অর্জনসহ জাতীয় পর্যায়ে ক্রীড়ায় সাফল্য পেয়েছে। বেশ কয়েক বছর উপজেলার সেরা বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে। অথচ পাঁচশতাধিক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি শ্রেণীকক্ষ। পাঠদান করাতে হচ্ছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তৈরি অস্থায়ী টিনশেডে। দীর্ঘদিন স্কুল ভবন পরিত্যক্ত। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে একটি নতুন ভবনের অনুমোদন হলেও অদৃশ্য কারণে সেটি স্থগিত হয়ে যায়।

বিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয় থেকে ১২৯ জন শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ কোটায় বৃত্তি লাভ করেন। ২০২২ সালের পরে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় মেধাবীদের বৃত্তি লাভের সুযোগ বন্ধ হয়। সর্বশেষ ওই বছর ছয়জন ট্যালেন্টপুল ও একজন সাধারণ কোটায় বৃত্তি লাভ করে। ২০১৮ সালে ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় ফাতেমা নামের এক ছাত্রী জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ২০২৩ ও ২০২৪ সালসহ বেশ কয়েকবার কয়রা উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কয়েকবার উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়। চলতি বছরে উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক লাভ করেন বিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৪৯২ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য ১০ জন শিক্ষক রয়েছে। বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। শিক্ষার্থীর অনুপাতে রয়েছে শিক্ষকও সংকট। বিদ্যালয়ের ছোট দুটি ভবনের একটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। অন্য ভবনের তিনটি কক্ষ ব্যবহারযোগ্য থাকলেও একটিতে রয়েছে অফিস। বাকি দুটি কক্ষে পাঠদান করানো হলেও সেখানে নেই কোন বেঞ্চ। পাঁচশতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য ব্যবহারযোগ্য কক্ষ মাত্র দুটি।