মশিউর রহমান, সাদুল্লাপুর : গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জাতীয় মহাসড়কের পাশে ধাপেরহাটে প্রতি হাটবারে বিক্রি হয় কোটি কোটি টাকার হলুদ। কৃষকেরা সরাসরি এই হাটে তাদের উৎপাদিত দু ধরনের শুকনা ও কাঁচা হলুদ নিয়ে এসে বিক্রি করেন। কাক ডাকা ভোর থেকে কৃষক তাদের উৎপাদিত হলুদ হাটে নিয়ে আসে। ক্রেতা বিক্রেতার হাক ডাকের মধ্য দরকষাকষির মাধ্যমে দিনব্যাপী চলে ক্রয় বিক্রয়।

বিক্রি হয় হাজার হাজার মেট্রিক টন শুকনা কাঁচা হলুদ। ধাপেরহাট এলাকার হলুদ গুণগত মানসম্মত হওয়ায় কোটি কোটি টাকার হলুদ ক্রয় করে পাইকারী ক্রেতারা। বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার দর-কষাকষির মধ্য চলে দিনব্যাপী হাটের ক্রয়-বিক্রয়। হাটে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক লোকের।

প্রকার ভেদে ৪০ কেজি ওজনের এক মণ হলুদ বিক্রি হয় ৬০০০-৮০০০ টাকায়।

গুণগত মান ভালো হওয়া সারা দেশ থেকে ক্রেতারা সপ্তাহে দুদিন বৃহস্পতিবার ও সোমবার এই হাটে এসে হলুদ ক্রয় করে। বাজারে চাহিদা থাকায় দাম ভালো পাওয়ায় হলুদ উৎপাদনে আগ্রহী এলাকার সকল কৃষকরা। ধাপেরহাটের মাটি হলুদ উৎপাদনের জন্য উপযোগী। তাই প্রতিটি কৃষক কম বেশি হলুদ চাষ করে থাকে। তারা কখনো সাথী ফসল ও একক ফসল হিসেবে হলুদের চাষ করে থাকে।

বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে হলুদ লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করে কৃষক। ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে ফসল সংগ্রহের পর তা সিদ্ধ করে শুকিয়ে বাজার জাত করে থাকে। এই বাজারে দু’ধরনের হলুদ পাওয়া যায় কাঁচা এবং শুকনা। হলুদ শুকনো হলুদ বাজারে সারা বছর পাওয়া যায়। দেশব্যাপী চাহিদা থাকায় বাংলাদেশের যে সকল কোম্পানিগুলো মসল্লা জাতীয় খাবার বাজারজাত করে সে সকল কোম্পানিগুলো ধাপেরহাটের ঐতিহ্যবাহী হলুদ ক্রয় করে বাজারজাত করে থাকে। এ সকল কোম্পানির প্রতিনিধিরা সরাসরি কৃষকের নিকট ও পাইকারদের নিকট থেকে হলুদ সংগ্রহ করে থাকে।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ অনিক ইসলাম বলেন, আমি ধাপেরহাটের হলুদের অনেক নাম ডাক শুনেছি তা বাস্তবে দেখছি। আমার উপজেলার কৃষকেরা কষ্ট করে দেশ সেরা হলুদ উৎপাদন করে যা উপজেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশাল অবদান রাখছে। আমরা উপজেলা প্রশাসন কৃষকদের উৎপাদিত সকল ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে উৎপাদন খরচ কমিয়ে ফলন নিশ্চিত করণে কৃষকদের পাশে আছি থাকবো। সারাদেশে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে গণমাধ্যম গুলো ও সাংবাদিক ভাইরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মাঠ পর্যায়ে আমরা কৃষকদের পরামর্শ ও বীজ সার বিনা মূল্যে সরবরাহ করছি।