দিনাজপুরে কুরবানির পশুর চামড়া কিনে রাস্তায় বসেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তারা বেশি দামে চামড়া কিনলেও পাইকাররা তাদের কাছে ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করেনি। ফলে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়ার কেনা দাম না পেয়ে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। আর চামড়া ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলছেন, চামড়া ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে। যে কারনে আশানুরূপ দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি বড় আকারের গরুর চামড়া ৪শ থেকে ৫শ টাকায় কিনেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। ছোট চামড়া গুলি ২শ থেকে ৩শ টাকা দরে ক্রয় করেন। এদিকে খাসির চামড়া বিক্রি করতে না পেরে বাজারেই ফেলে গেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে কাঁচা চামড়াগুলি। ৯ জুন সোমবারও দিনাজপুরের রামনগর চামড়া বাজারে রাস্তার দুই ধারে স্তপ আকারে ছাগলের চামড়া পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

দিনাজপুরের একমাত্র চামড়ার বাজার দিনাজপুর সদরের রামনগর চামড়ার বাজারে ঈদের দিন সকাল থেকেই চামড়া কেনা-বেচা শুরু হয়। চামড়া বিক্রি করতে এসে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। কেনা দাম না পেয়ে লোকসান করে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে তাদের। এতে করে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হয়েছেন। চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করেন, দিনাজপুরের পুলহাট হয়ে কুরবানির চামড়া ঠাকুরগাঁও হয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে। তিনি বলেন, এবার চামড়ার আমদানী অনেক কম। অনেক চামড়া ব্যবসায়ী আবার ট্যানারী মালিকদের কাছে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় চামড়া কেনা-বেচায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানালেন। এদিকে খাসির চামড়া বিক্রি না হওয়ায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। দিনাজপুর চামড়া মালিক গ্রুপের সভাপতি আখতার হোসেন জানান, রামনগর এই চামড়ার বাজারে আগে এক থেকে দেড় লাখ পিস চামড়া কেনা-বেচা হতো। এখন তা নেমে এসেছে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার পিস। তিনি বলেন ট্যানারি গ্রুপের সিন্ডিকেটের কারণে জেলা পর্যায়ের চামড়া ব্যবসায়ীরা অর্থাৎ আড়তদাররা সব সময় ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আসছেন। ট্যানারি মালিকরা বিপুল অংকের টাকা বকেয়া রেখেছে। এই টাকা তারা ইচ্ছামত পরিশোধ করছে। হলে জেলা পর্যায়ের আড়তদাররা ইচ্ছা থাকলেও ঠিক মত চামড়া ক্রয় করতে পারেন না। ট্যানারি মালিকদের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। কুরবানী ঈদের প্রথম দিন সকাল থেকেই রামনগর বাজারের আডতদার ও চামড়া ব্যবসায়ীরা খাসির চামড়া কেনা থেকে বিরত থাকেন। ফলে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা খাসির চামড়া না বিক্রি করতে পেরে রাস্তার ধারে ফেলে যান। রামনগর বাজারে গত তিন দিনে রাস্তার দুই ধারে খাসির চামড়ার স্তুপ পরে যায়। রামনগর বাজারে এলাকাবাসী কাঁচা চামড়ার দুর্গন্ধে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তা দিয়ে পথচারীরা দুর্গন্ধে চলাচল করতে পারছে না। তবে পৌরসভার পক্ষ থেকে দ্রুতই সেসব অপসারণ করা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।