সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেফতারের ঘটনায় নিম্মোক্ত বিবৃতি দিয়েছেন (প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন) বাংলাদেশ ল'ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট মোঃ জসিম উদ্দিন সরকার ও সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

গ্রেফতারে বিলম্ব হলেও এতদিন পরে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করায় জাতি স্বস্তি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক কে আটক করে ডিবি পুলিশ।

খায়রুল হক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার দুইজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি—বিচারপতি এম এ মতিন ও বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমানকে ডিঙিয়ে খায়রুল হককে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল মামলার রায় প্রদানকারী হিসেবে খায়রুল হক রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত হন। আপিল বিভাগে থাকাকালে তিনি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় দেন, যার মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়।

দেশের গণতন্ত্র রক্ষার্থে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখতে দেশের বিশিষ্ট আইনবিদদের জোরালো আবেদন উপেক্ষা করে অবসরের এক সপ্তাহ আগে বিচারপতি খায়রুল হক এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে 'অসাংবিধানিক' ঘোষণা করে রায় দেন। যার ফলে দেশে রাজনৈতিক সংকট তৈরী হয়। বিচার বিভাগের উচ্চ পদে আসীন হয়ে এই রায়ের মাধ্যমে তিনি প্রধান বিচারপতির আসনকে কলঙ্কিত করেছেন।

এই রায়ের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদী শাসন শোষণ এবং বিরোধীদল নির্যাতন ও নিপীড়নে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি এবং মামলার রায় জালিয়াতির মত অভিযোগে কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন ‘বিচারবিভাগ মানুষের সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা'। আর এই আস্থার জায়গাটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন খায়রুল হক, শুধুমাত্র তার রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ।

জাতি এখন তার অপরাধের সুষ্ঠু বিচার এবং যথাযথ শাস্তি দেখতে চায় দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি, যাতে ওই পদে বসে আর কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।