নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের ঢাকার গুলশান, আশুলিয়া এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের থাকা ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকার জমি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে গুলশানের ৬৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ জমির মূল্য ২৬ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, এদিন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ এসব সম্পত্তি জব্দ চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৭৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকা সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলা করেছে। গত ৬ মার্চ ও ১৮ নভেম্বর আদালত তার নামে কিছু সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয়। এর বাইরে এসব সম্পদের হদিশ পাওয়া যায়।

শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধসহ নাসা গ্রুপের অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধের কথা বলে নজরুল ইসলাম মজুমদার তার অবৈধ সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়, মামলা নিষ্পত্তির আগে এসব অবৈধ সম্পত্তি হস্তান্তর, স্থানান্তর, রূপান্তর বা বিক্রি হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। অবিলম্বে এসব সম্পদ জব্দ করা আবশ্যক। ক্ষমতার পালাবদলের পর গত বছরের ২ অক্টোবর নজরুল ইসলাম মজুমদারকে রাজধানীর গুলশানে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তার আগে ব্যাংক খাতে পরিবর্তনের অংশ হিসেবে গত ২৯ অগাস্ট এক্সিম ব্যাংকে তাকে বাদ দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বিএবির নেতৃত্বও হারান তিনি। এর মাধ্যমে ১৭ বছর পর নজরুল ইসলামের বলয় থেকে বের হল শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকটির পর্ষদ।

ব্যাংক খাতের আলোচিত নাম নজরুল ইসলাম ২০০৭ সাল থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। বিএবি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকার সময় বেসরকারি ব্যাংক থেকে চাঁদা তুলে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা নিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। ব্যাংক থেকে নানা সময় চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে উদ্যোক্তাদের সুবিধা বাড়ানো ও নীতি পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার অভিযোগও রয়েছে।

পোশাক রপ্তানির আড়ালে মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ ডলার যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের অভিযোগে নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।