পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে থাকা দুবাইয়ের দুইটি ফ্ল্যাট জব্দ এবং দুইটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশননের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ফ্ল্যাট দুইটির মধ্যে একটি বুর্জ খলিফায়, যেটির মূল্য ৫৫ লাখ দিরহাম। আরেকটি আল ওয়াসীতে, সেটির দাম ৪৯ লাখ ৭৯ হাজার ৮৫৪ দিরহাম। এছাড়া অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া দুইটি ব্যাংক হিসাবে এক লাখ ৬২ হাজার দিরহাম আছে বলে দুদক জানিয়েছে।
এদিন দুদকের উপ পরিচালক জয়নাল আবেদীন জীশান মির্জার ফ্ল্যাট জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে অর্জিত অর্থ অবৈধভাবে পাচার করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ধারা ২৭(১) এর অধীনে ফৌজদারি অপরাধ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে অপরাধের অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য অভিযুক্ত জীশান মির্জার স্থাবর সম্পত্তির হস্তান্তর বা হস্তান্তর বন্ধ করার জন্য তার নামে থাকা স্থাবর সম্পত্তি জব্দ এবং অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধ করা জরুরি।
৭৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বেনজীর, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চারটি মামলা করে দুদক। মামলায় বলা হয়, বেনজীর ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২ কোটি ৬২ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তার স্ত্রী জিশান মির্জা ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ১৬ কোটি ১ লাখ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। তাদের বড় মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং মেজ মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীর ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ প্রধান, যিনি একাধারে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট র্যাবেরও প্রধান ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যান। গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে তাকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক কালের কণ্ঠ। সেখানে সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। এরপর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে।