বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর চাঁনখারপুলে আনাসসহ ছয়জনকে হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

একই সঙ্গে মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ১০ আগস্ট ও রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১১ আগস্ট দিন ঠিক করেছেন আদালত।

গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলার সূচনা বক্তব্যের জন্য আগামী ১০ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিন মামলার মূল বিষয়বস্তু তুলে ধরা হবে। এছাড়া সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ আগস্ট।

এর আগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য গতকালের দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

মামলায় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগে (ফরমাল চার্জ) আটজনকে আসামী করা হয়েছে। মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানিতে আসামীপক্ষের আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

আট আসামীর মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল পলাতক আছেন। এই চারজনকে মামলা থেকে অব্যাহতি (ডিসচার্জ) দিতে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. কুতুবউদ্দিন।

মামলার অপর চার আসামী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। তারা হলেন শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

গত ২৯ জুন এই আট আসামীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন ট্রাইব্যুনালে জানিয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশন টিম।

এর আগে গত ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে এই মামলার ফরমাল চার্জ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিনই এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগ অনুযায়ী, গণ-অভ্যুত্থানের সময় সারা দেশে ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অংশ হিসেবে গত বছরের ৫ আগস্ট চাঁনখারপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তারা হলেন শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া।