মঞ্চ ’৭১ -এর অনুষ্ঠানের ঘটনায় সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলামকে জামিন দেয়নি আদালত। ঢাকার শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এ মামলায় জামিন আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. আরিফুল ইসলাম এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী এ তথ্য দিয়েছেন।

এদিন ভোরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আনন্দলোক ইকো রিসোর্ট থেকে সফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ইন্সপেক্টর মো. আখতার মোর্শেদ তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী লিটন মিয়া জামিন চেয়ে শুনানি করেন। তিনি আদালতে বলেন, সফিকুল ইসলাম কথিত মামলার সাথে কোনোক্রমে জড়িত না। যে ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। হয়রানি করতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একজন বয়স্ক, অসুস্থ মানুষ। ‘মঞ্চ ৭১’ এর সদস্য না। ঘটনার সাথে তার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। তার জামিন প্রার্থনা করছি। রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, সরকার উৎখাতে এ আসামিরা সেদিন জড়ো হয়েছিলেন। ৫ অগাস্ট মঞ্চ করে তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ফিরিতে আনতে চায়। তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে না। তার জামিনের বিরোধীতা করছি। শুনানি নিয়ে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে সফিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ২৮ অগাস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মঞ্চ ৭১‘এর আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে এক আলোচনা সভায় ‘মব’ হামলার হন সাবেক মন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী কয়েকজন। সেখান থেকে লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে তাদের শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

এক দিন আগে আরেক সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খানকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়, যিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে নিয়মিত টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। আবু আলমকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তিনিও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং ‘সরকাবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ভূঁইয়া সফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পরও অন্যদের সাথে তার ‘গোপন আঁতাতের’ তথ্য পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সফিকুল ইসলাম ২০১৩ সালে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ছিলেন। ২০১৫ সালে তাকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব করা হয়।