ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে ‘কারাগার’ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, কোন জায়গাকে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হবে, সেটা প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার বিবেচ্য বিষয় নয়, আমাদের বিবেচ্য বিষয় হলো আইনানুযায়ী কাজটা করতে হবে। ’
সোমবার (১৩ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ‘অস্থায়ী কারাগার’ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আসামিকে যদি গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আনতে হবে। সেটা সংবিধান, ট্রাইব্যুনাল আইন ও ফৌজদারি কার্যবিধিতে আছে। তারপর আদালত তাকে যেখানে রাখতে বলবেন সেখানে রাখবে। ’
ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে ‘কারাগার’ ঘোষণা করে রোববার (১২ অক্টোবর) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত এসেছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. হাফিজ আল আসাদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৪১(১) এর ক্ষমতাবলে এবং দ্য প্রিজন্স অ্যাক্ট, ১৮৯৪ (১৮৯৪ এর নবম) এর ধারা ৩(বি) অনুসারে, ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এমইএস’ বিল্ডিং নং-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ ঘোষণা জারি করা হয়েছে এবং এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
তবে কোন উদ্দেশ্যে ভবনটি সাময়িক কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হবে, সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ পতিত ফ্যাসিবাদের আমলে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সম্প্রতি সাবেক ও বর্তমান ২৪ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেওয়া হয়।
এরপর গত ১১ অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসের মেসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছে তাদের মধ্যে ১৫ জন কর্মকর্তা ঢাকায় সেনা হেফাজতে আছেন। আমরা ১৬ জনকে সেনা হেফাজতে আসার জন্য বলেছিলাম। ১৫ জন আমাদের সেনা হেফাজতে এসেছেন।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক সচিবের দায়িত্ব পালন করা মেজর জেনারেল কবির আহমেদ ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট (পলাতক) বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।