প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার বিভাগ আস্থা অর্জন করতে পারবে তখনই যখন তা আরও স্বাধীন, দক্ষ ও মানবিক হবে। গত সোমবার বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে "National Conference on ADR: Role of District Legal Aid Committees (DLACs) in Implementing New Legislations"-শীর্ষক একটি জাতীয় কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ন্যায়বিচারকে জনগণকেন্দ্রিক করতে হলে আইনগত সহায়তা ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (ADR) বিচারব্যবস্থার মূল কেন্দ্রে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় ধারণা করা হয়েছিল যে প্রধান বিচারপতির মূল দায়িত্ব হবে আইনের সূক্ষ্ম ব্যাখ্যা প্রদান ও প্রক্রিয়াগত জটিলতায় মনোযোগী হওয়া। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোয় যে প্রবল পরিবর্তন নিয়ে আসে, সে পরিবর্তন আমাদের ন্যায়বিচার প্রদানের অগ্রাধিকার ও সেটির পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের রাজনৈতিক রূপান্তর বিচার ব্যবস্থার ওপরও গভীর প্রভাব ফেলেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত এক বছরে আইনগত সহায়তা খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আনা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ২০২৪ সালের আগস্টের উত্তাল সময়ে বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে প্রথম সংস্কার পদক্ষেপ এসেছিল আইনগত সহায়তা (Legal Aid) খাতে। কেবল অর্থনৈতিক সক্ষমতার ভিত্তিতে নয়, বরং বাস্তব পরিস্থিতিগত অক্ষমতার কারণেও যেন কেউ আইনজীবী ছাড়া আদালতে হাজির না হন, তা নিশ্চিত করতে প্রচলিত "অর্থনৈতিক সামর্থ পরীক্ষা" Means Test এর পাশাপাশি চালু করা হয়েছে “সক্ষমতা পরীক্ষা” (Capacity Test)।

তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলন আমাদের শিখিয়েছে যে বৈধতা আসে আস্থা থেকে। আর বিচার বিভাগ আস্থা অর্জন করতে পারবে কেবল তখনই, যখন এটি আরও স্বাধীন, দক্ষ ও মানবিক হবে। এখানে স্বাধীনতা মানে প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন, দক্ষতা মানে মামলা জট কমাতে আধুনিক প্রক্রিয়া ও ADR-এর ব্যবহার এবং মানবিকতা মানে রূপান্তরমূলক আইনগত সহায়তা।